গাড়ি ছিনতাই করে পালাতে গিয়ে আসানসোলের কাছে চালককে গুলি ডাকাতদের, গুলিবিদ্ধ আরও এক
আনন্দবাজার | ০৯ জুন ২০২৪
পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জে ‘সেনকো গোল্ড’ নামে একটি গয়নার দোকানে রবিবার ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতি করে দোকান থেকে বেরোনোর সময় পুলিশের সঙ্গে গুলি বিনিময় হয় ডাকাতদের। গুলি লাগে এক ডাকাতের। সেই অবস্থায় দু’টি বাইক নিয়ে আসানসোলের দিকে পালিয়ে যায় সাত ডাকাত। পথে চালকের পায়ে গুলি করে একটি গাড়িও ছিনতাই করে তারা। তার পর সেই গাড়ি নিয়ে চম্পট।
রানিগঞ্জের সোনার দোকানে তখন ডাকাতি চলছে। সেই সময় ওই এলাকায় কোনও কাজে গিয়েছিলেন শ্রীপুর ফাঁড়ির বড়বাবু মেঘনাদ মণ্ডল। কিছু একটা গোলমাল চলছে আঁচ করে মেঘনাদ কোমর থেকে বন্দুক বার করে দোকানের দিকে এগিয়ে যান। ঠিক সেই সময়ই দোকান থেকে ডাকাতি করে বেরিয়ে আসছিল ডাকাতেরা। কার্যত, মেঘনাদের মুখোমুখি পড়ে যায় এক ডাকাত। চোখের পলক ফেলার আগেই মেঘনাদ গুলি চালিয়ে দেন ডাকাতকে লক্ষ্য করে। পায়ে গুলি খেয়ে লুটিয়ে পড়ে সে। তত ক্ষণে বাইরে চলে এসেছে বাকি ডাকাতেরাও। মেঘনাদ একটি ট্রান্সফরমারের পিছনে লুকিয়ে ডাকাতদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকেন। ডাকাতদলটিও পাল্টা গুলিবৃষ্টি শুরু করে মেঘনাদকে লক্ষ্য করে। বেশ কিছু ক্ষণ ধরে মেঘনাদের সঙ্গে গুলির লড়াই চলে ডাকাতদের। এর মধ্যেই একটি গাড়িকে ‘কভার’ বানিয়ে দু’টি বাইকে চেপে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় সাত ডাকাত। পিছনে ছোটেন মেঘনাদ। কিন্তু নাগাল পাননি।
সূত্রের খবর, একটি বাইকে তিন জন এবং অন্য বাইকে চার ডাকাত পালায়। কিন্তু কিছু দূর যেতেই তারা বুঝতে পারে, এক বাইকে চার জনে বেশি দূর পালানো যাবে না। তাতে মানুষেরও সন্দেহ হতে পারে। রানিগঞ্জ থেকে আসানসোল যাওয়ার রাস্তায় মহিশীলা কলোনির চক্রবর্তী মোড়ে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন নয়ন দত্ত। পরিবার নিয়ে তাঁরা যাচ্ছিলেন অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। কিছু কিনতে চক্রবর্তী মোড়ে গাড়ি থামিয়েছিলেন নয়ন। সেই সময় সেখানে উপস্থিত হয় সাত ডাকাত। তারা নয়নকে হিন্দিতে বলে, ‘‘একটু লিফ্ট দিতে হবে। পাশে জেলা হাসপাতালে আমাদের ছেড়ে দিন। পায়ে চোট লেগেছে।’’ কিন্তু সন্দেহ হওয়ায় নয়ন রাজি হননি। জানান, পরিবার নিয়ে তিনি অনুষ্ঠানবাড়ি যাচ্ছেন, তাই লিফ্ট দিতে পারবেন না। স্থানীয় সূত্রে খবর, এ কথা শুনেই কোমর থেকে বন্দুক বার করে নয়নের পায়ে গুলি চালিয়ে দেয় ডাকাতেরা। গুলি চলার আওয়াজ পেয়ে স্থানীয় এক জন নয়নকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তাঁরও পায়ে গুলি করে ডাকাতেরা। তার পর নয়নের গাড়ি নিয়ে চম্পট দেয়। ডাকাতদের দু’টি বাইকই উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অন্য দিকে, রবিবার সকালে সালানপুর থানার অন্তর্গত এথোরা গ্রামের পাশ দিয়ে যাওয়া জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে বাইক নিয়ে যাচ্ছিলেন ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা এক ব্যক্তি। সকাল সাতটা নাগাদ এথোরা গ্রামের কাছে তাঁর থেকে সব কিছু লুট করা হয়। সেই সময় গুলিও চলে। সকালের এই ঘটনার সঙ্গে রানিগঞ্জে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনার কোনও সম্পর্ক রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ডিসি সেন্ট্রাল ধ্রুব দাসের নেতৃত্বে তদন্ত চলছে। ঘটনাস্থলে সিআইডির দলও পৌঁছে গিয়েছে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।