• দ্বিতীয় বার মন্ত্রী শান্তনু, বাড়তি প্রত্যাশা বনগাঁয়
    আনন্দবাজার | ১০ জুন ২০২৪
  • দ্বিতীয় বারের জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে রবিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ নিলেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। এ বার ভোটে তিনি তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসকে ৭৩ হাজার ৬৯৩ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন।

    ২০১৯ সালে ভোটে জিতে বন্দর, নৌ-পরিবহণ ও জলপথ দফতরের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল শান্তনুকে। এ বার তাঁকে পূর্ণমন্ত্রী করা হবে কি না, সেটাই দেখার। রবিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আগে সকালে তাঁর বাসভবনে একটি চা-চক্রের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে শান্তনু যোগ দেওয়ায় তখনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, শান্তনু মন্ত্রিত্ব পাচ্ছেন। তবে বাংলা থেকে এই প্রথম কেউ মোদীর মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী হবেন কিনা, সে বিষয়ে এখনও কোনও তরফে নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি।

    এ রাজ্যে এ বার বিজেপির ফল ভাল না হলেও বনগাঁ, রানাঘাটের মতো মতুয়া অধ্যুষিত আসনে বিজেপি বড় ব্যবধানে জয়লাভ করেছে। রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করছেন, মতুয়া সমাজের ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখেও শান্তনুকে মন্ত্রিসভায় এ বার জায়গা দেওয়া হয়েছে।

    শান্তনু মতুয়া ঠাকুরবাড়ি পরিবারের সদস্য এবং অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি। এ রাজ্যে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষের ভোট টানতে শান্তনুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে বলে মনে করেন বিজেপির অনেকে। এ সব কথা মাথায় রেখেই তাঁকে এ বার মন্ত্রী করা হল বলে মনে করা হচ্ছে।

    দ্বিতীয় বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শান্তনু শপথ নেওয়ায় মতুয়া উদ্বাস্তু মানুষেরা আনন্দিত। অনেকেই জানালেন, কেন্দ্র যে নাগরিকত্ব শংসাপত্র দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। আশা করা যায়, শান্তনু সেই কাজ আরও তরান্বিত করবেন।

    বনগাঁর সাধারণ মানুষ চাইছেন, দ্বিতীয় বার মন্ত্রী হয়ে শান্তনু যেন প্রথমেই এলাকার মূল সমস্যাগুলি সমাধানের দিকে নজর দেন।

    বনগাঁ শহরের বাসিন্দা টোটো চালক প্রতাপ দে বলেন, ‘‘শান্তনু ঠাকুর মন্ত্রী হওয়ায় আমরা খুশি। আমি চাইব, তিনি যেন যশোর রোড সম্প্রসারণ এবং ইছামতী নদী সংস্কারে আগে উদ্যোগী হন।’’ শান্তনু প্রথম বার মন্ত্রী হওয়ার সময়েও তাঁরা একই প্রত্যাশার কথা জানিয়েছিলেন।

    মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে শান্তনু ফোনে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর নীতি-আদর্শ মেনে উন্নয়নমূলক কাজ আরও বেশি করে করব। রাজ্য সরকারের সহযোগিতা পেলে কল্যাণীতে বিমানবন্দর, যশোর রোড সম্প্রসারণ এবং ইছামতী নদী সংস্কারের কাজ করতে চাই।’’

    পরাজিত প্রার্থী তথা তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের প্রতিক্রিয়া, ‘‘গত পাঁচ বছর মন্ত্রী এবং সাংসদ হিসেবে শান্তনুর কোনও ক্রিয়াকলাপ নজরে পড়েনি। মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এ বার আশা করব, তিনি এলাকার সমস্যাগুলি সমাধান করবেন।’’

    তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর বলেন, ‘‘মানুষ শান্তনুকে ভোটে জিতিয়েছেন। মন্ত্রী হয়েও গত পাঁচ বছরে মানুষের জন্য কোনও কাজ করেনি। এ বার যেন করেন, এটুকুই চাওয়া।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)