সম্প্রসারিত জাতীয় সড়ক ও উড়ালপুল নির্মাণের কারণে বদলে গিয়েছে রানাঘাট শহরের মানচিত্র। এক সময় যে সড়কের দু'পাশে সারি সারি গাড়ির যন্ত্রাংশ বিক্রয় ও মেরামতির রমরমা ব্যবসা ছিল। বর্তমানে তা উধাও। কেন্দ্রের জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জমি অধিগ্রহণ করে যেমন সড়ক সম্প্রসারণ করেছে। তেমনই রাজ্য সরকার আবার অটোমোবাইল ব্যবসায়ীদের এক ছাতার নীচে আনতে তৈরি করেছিল কর্মতীর্থ।
২০১৯ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নদিয়া জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে ওই কর্মতীর্থের শিলান্যাস করেন। শুরু হয় রানাঘাটের মিশন রেলগেটের কাছে জাতীয় সড়কের পাশে কর্মতীর্থের নির্মাণ কাজ। জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শেষ হলেও, এখনও কিছু কাজ বাকি থাকায় ওই কর্মতীর্থে ব্যবসার পসরা সাজিয়ে বসতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। কবে হবে কর্মতীর্থের দ্বারোদঘাটন, প্রশ্ন তুলছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কয়েক আগেও রানাঘাট মিশন রেলগেট থেকে চূর্ণী নদীর সেতু পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় জাতীয় সড়কের দু'ধারে ছোট বড় মিলিয়ে ১৫০টি অটোমোবাইলের দোকান ছিল। সড়ক সম্প্রসারণের জন্য জমি জরিপের সময় দেখা যায় ওই দোকানগুলি ভাঙা পড়বে। সে জন্য ব্যবসায়ীরা সম্মিলিত ভাবে অটোমোবাইল ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জেলা প্রশাসনের কাছে একটি কমপ্লেক্স তৈরির আবেদন জানান। এমনকি অ্যাসোসিয়েশনের তরফে কমপ্লেক্স তৈরির জন্য কেনা হয় জমিও। পরবর্তীতে সেই জমিতে সরকারি ভাবে কর্মতীর্থ গড়ে তোলার কাজে সিলমোহর দেয় প্রশাসন। নদিয়া জেলা পরিষদ সাড়ে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ করে।
বর্তমানে কর্মতীর্থের দ্বিতল ভবন নির্মাণের কাজ শেষের পথে। কিন্তু শেষ পাঁচ বছরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে অটোমোবাইল ব্যবসা ও গাড়ির যন্ত্রাংশ মেরামতির সঙ্গে যুক্ত বহু শ্রমিক পেশা বদলেছেন। মারা গিয়েছেন অনেকে। যার জেরে ভাটা পড়েছে এই ব্যবসায়। আর কতদিন সময় লাগবে ওই কর্মতীর্থের নির্মাণ সম্পূর্ণ হতে সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।
রবিবার দ্বিতল ওই ভবনে গিয়ে দেখা গেল ৮৮টি দোকান ঘর তৈরির কাজ শেষ। অধিকাংশ দোকানে রঙের প্রলেপও পড়েছে। অনেকে আবার অস্থায়ী ভাবে ভবনের বাইরে থাকা ফাঁকা জায়গায় ছোট চারচাকা গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখে মেরামতির কাজ করছেন। অটোমোবাইল ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অমলেশ দত্ত বলেন, "প্রথম থেকেই এই ভবন নির্মাণে জেলা প্রশাসনকে পাশে পেয়েছি। রাজ্যে একমাত্র রানাঘাটেই শুধু অটোমোবাইলের জন্য এ ধরনের কর্মতীর্থ গড়ে উঠেছে। তবে ভবনের কিছু কাজ এখনও বাকি। কাজ শেষ হলেই কর্মতীর্থ চালু করা সম্ভব।"
কাজ কবে শেষ হবে? জেলা সভাধিপতি তারান্নুম সুলতানা মীর বলেন, "নির্বাচনের জন্য হয়তো ওই কাজ শেষ করা যায়নি। তবে দ্রুত যাতে তা শেষ করা যায় সেই চেষ্টা করছি।"