• মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ে জঙ্গি হামলা , গুলিতে আহত এক নিরাপত্তা কর্মী 
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১০ জুন ২০২৪
  • ইম্ফল, ১০ জুন  ? মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের কনভয়ে হামলা চালাল  সন্ত্রাসবাদীরা। কাশ্মীরে তীর্থযাত্রীদের বাসে জঙ্গি হামলার পরের দিনই আবার জঙ্গি হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল মণিপুরে। কয়েক রাউন্ড গুলি চলেছে বলে খবর। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন এক পুলিশকর্মীও। তবে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী সুরক্ষিত রয়েছেন বলে জানা গেছে।  
    সূত্রের খবর, সোমবার সকালে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের কনভয় হিংসা বিধ্বস্ত জিরিবামের দিকে যাচ্ছিল।  সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে মণিপুরের কাঙ্গপোকপি জেলায় এন বীরেন সিংয়ের কনভয় লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদীরা। পাল্টা নিরাপত্তা রক্ষীরাও গুলি ছোড়েন। দুই পক্ষের গুলি বিনিময়ে একজন নিরাপত্তারক্ষী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। দ্রুত তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। তবে সুরক্ষিত রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে, গোটা ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়।    
    বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের উত্তপ্ত মণিপুর। এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর উপরেই হামলার চেষ্টা হল।গত বছরের মে মাস থেকেই উত্তপ্ত মণিপুরে হিংসার আগুন জ্বলে ওঠে। মাসের পর  মাস কুকি ও মেই তেই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে মণিপুরের বহু মানুষ প্রাণ হারান। ধর্ষণ, খুন-সহ অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় গোটা মণিপুর জুড়ে। বছর না কাটতেই, আবার উত্তপ্ত মণিপুর। গত শনিবারই মণিপুরের জিরিবামে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ আসে। গত ৬ জুন এক ব্যক্তির মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার হলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে । এই ঘটনাতে কেন্দ্র করে জিরিবামে প্রায় ৭০টিরও বেশি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। একাধিক সরকারি দফতরেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। প্রাণ বাঁচাতে দলে দলে মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। ঘরছাড়া হাজারেরও বেশি স্থানীয় বাসিন্দা।সেই অশান্ত পরিস্থিতি সামাল দিতেই জিরিবাম এলাকায় যাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সে সময়ই এই হামলা চলে বলে খবর।
    অভিযোগ, গত ৬ জুনের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কুকি জঙ্গিরা জড়িত। জিরিবাম মণিপুরের সীমান্তবর্তী এক শহর। সেখানে এবং মণিপুরের তামেংলং জেলা সংলগ্ন এলাকায় একাধিক গ্রামে কুকিরা একের পর এক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ।
    যদিও এই অভিযোগের পাল্টা কুকি নাগরিক সংস্থাগুলি একটি প্রেস বিবৃতিতে এই ঘটনার নিন্দা করে জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীকে এই ঘটনায় জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কুকি সম্প্রদায়ের কিছু নাগরিক সংগঠনের অভিযোগ, গত বৃহস্পতি এবং শুক্রবার রাতে মেই তেইরা জিরিবামে সন্ত্রাস চালিয়েছে। তারাই স্বাভাবিক পরিস্থিতি নষ্ট করতে চাইছে।
    জিরিবাম জেলা জুড়ে জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। সন্দেহভাজন জঙ্গিরা জিরিবামে দুটি পুলিশ ফাঁড়ি, একটি ফরেস্ট বিট অফিসও পুড়িয়ে দেয়। ২০০ টিরও বেশি গ্রাম খালি করে দেওয়া হয়েছে । জিরিবাম থানার একটি নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে সেইসব গ্রামের বাসিন্দারা। শনিবার ইম্ফলের কাংলা দুর্গ থেকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর এমআই-১৭ হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ৭৫ জন রাজ্য কমান্ডো কর্মীর শক্তিশালী দল মণিপুরে অশান্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)