লোকসভা নির্বাচনে বীরভূম জেলার দু’টি আসনেই বিপুল ব্যবধানে জয় পেয়েছে তৃণমূল। কিন্তু, বোলপুর শহরে এ বারেও বিজেপির থেকে পিছিয়ে আছে তৃণমূল কংগ্রেস। অথচ ২০২২ সালের পুর-নির্বাচনে বোলপুরে বিরাট জয় পেয়েছিল তৃণমূল। দু’বছরের ব্যবধানে কেন শহরের ভোটারদের একাংশ মুখ ফেরালেন, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে শাসক শিবিরে। শুধু চর্চাই নয় শহরের একাধিক ওয়ার্ডে কেন তারা পিছিয়ে, তার কারণ অনুসন্ধানে নামতে চলেছে তৃণমূল।
দলীয় সূত্রের খবর, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বোলপুর শহরে ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টিতে বিজেপি এগিয়েছিল তৃণমূলের চেয়ে। সেবার অনুব্রত মণ্ডলের ওয়ার্ডেও বিজেপি পিছনে ফেলে শাসকদলকে। গত বিধানসভা নির্বাচনে বোলপুর আসন থেকে জয় এলেও শহরের ১৪টি ওয়ার্ডেই বিজেপি এগিয়েছিল। সেই নির্বাচনেও অনুব্রতের ওয়ার্ড থেকে জয় মেলেনি তৃণমূলের। যা অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় দলীয় নেতৃত্বের কাছে। তবে ২০২২ সালের পুরসভা নির্বাচনে বোলপুরে ২২টি ওয়ার্ডের মধ্যে একটিতেও প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি। ১০টি ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় তৃণমূল।
ফলে, এ বারের লোকসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়া ওয়ার্ডগুলি পুনরুদ্ধার করতে মরিয়া ছিল শাসকদল। প্রতিটি ওয়ার্ডে লিড দেওয়ার জন্য স্থানীয় পুর-প্রতিনিধিদের বলে দেওয়া হয়েছিল। মিটিং, মিছিল থেকে শুরু করে পাড়ায় পাড়ায় জনসংযোগের মধ্য দিয়ে নিবিড় প্রচার চলেছে। লক্ষ্মীর ভান্ডারকে হাতিয়ার করেও শহর জুড়ে প্রচার চালানো হয়। কিন্তু, তাতেও শহরের ‘মন’ পায়নি তৃণমূল। পুরসভার ২২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টিতে তৃণমূলকে পিছিনে ফেলেছে বিজেপি। জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল এবং মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের ওয়ার্ডও এ বার হাতছাড়া হয়েছে।
দলীয় সূত্রের খবর, কেন এই হার, তা অনুসন্ধান করতেই আগামী ১৩ জুন ও ২২ জুন বৈঠক ডাকা হয়েছে সব ওয়ার্ডের পুর-প্রতিনিধি, শহর সভাপতি ও শহর কমিটির দায়িত্বে থাকা সকলকে নিয়ে। একই সঙ্গে প্রতিটি ওয়ার্ড ধরে কোথায় খামতি রয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। বোলপুরের বাসিন্দা এবং জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য সুদীপ্ত ঘোষ বলেন, “এত উন্নয়ন সত্ত্বেও শহরে কেন হার হল, তা আমাদের সকলকেই ভাবাচ্ছে। বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হবে।” চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “কেন এই খারাপ ফল হল শহরে, তা আমরা দেখব। একই সঙ্গে শহরের ভোটারেরা কেন মুখ ফেরালেন, তা-ও সকলের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করা হবে।”