• আগ্রাসী লালফৌজকে ঠেকাতে উপেন্দ্র দ্বিবেদী মোক্ষম কৌশল ভারতের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৩ জুন ২০২৪
  • দিল্লি, ১২ জুন? আগামী ৩০ জুন মেয়াদ শেষ হচ্ছে দেশের চিফ অফ আর্মি স্টাফ জেনারেল মনোজ পান্ডের৷ তাঁর জায়গায় দেশের নয়া সেনা প্রধান হতে চলেছেন লেফটেনান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী৷ আগামী ৩০ জুন তাঁকে ওই পদে নিয়োগ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ মঙ্গলবার রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে ভারত সরকার৷
    লোকসভা নির্বাচন পর্ব সম্পন্ন হওয়ার পর দেশের নয়া সেনাপ্রধান হিসেবে লেফটেনান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীর নাম ঘোষণা করেছে কেন্দ্র৷ গত কয়েক বছর ধরে সীমান্তে লালফৌজের আগ্রাসনের মাঝে তাঁকে এই পদে বহাল গভীর কূটনৈতিক চাল হিসেবে দেখছে বিশেষজ্ঞ মহল৷ সেনাবাহিনীতে ৪০ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই আধিকারিক উত্তর ও পূর্ব ভারতকে চেনেন হাতের তালুর মতো৷ তাই চিন সীমান্তে চলতে থাকা সমস্যাকে সামাল দিতে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, অত্যন্ত বিবেচনা করেই লেফটেনান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীকে আনা হয়েছে দেশের সেনাপ্রধানের পদে৷
    বর্তমানে ভাইস চিফ অফ আর্মি স্টাফ হিসেবে কর্মরত উপেন্দ্র দ্বিবেদী৷ উল্লেখ্য, লেফটেন্যান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীর জন্ম ১৯৬৪ সালের ১লা জুলাই৷ তিনি রেওয়ার সৈনিক স্কুল থেকে পডে়ছেন৷ ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ এবং ইউএস আর্মি ওয়ার কলেজের প্রাক্তন ছাত্র তিনি৷ এছাড়া ডিফেন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজে এম.ফিল এবং স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ও মিলিটারি সায়েন্সে দু’টি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে৷ ১৯৮৪ সালে ভারতীয় সেনার জম্মু ও কাশ্মীর রাইফেলসের রেজিমেন্টে সেকেন্ড লেফটেনান্ট পদে যোগ দিয়েছিলেন তিনি৷ ৪০ বছরের দীর্ঘ কর্মজীবনে সামলেছেন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব৷ গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সহকারি সেনা প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার আগে ২০২২ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত উত্তরের সেনাবাহিনীর কমান্ডিং চিফ ছিলেন তিনি৷ একদিকে জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাস দমনে তাঁর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা তো বটেই চিন-লাদাখ সীমান্ত সংঘাতের সময় চিনের সঙ্গে আলোচনায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন এই আধিকারিক৷
    বর্তমানে দেশের মাথাব্যাথার অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে চিন৷ লাদাখ, হিমাচল প্রদেশ, অরুণাচলপ্রদেশ এমনকী গত কয়েক বছরে সিকিম সিমান্তেও নজরে এসেছে লালফৌজের আগ্রাসন৷ লাদাখ, অরুণাচলে সরাসরি সংঘাতে জড়াতে দেখা হয়েছে দুই দেশের সেনাকে৷ এহেন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা ক্ষেত্রে পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ চিন৷ তাই নীতিও বদলেছে৷ এহেন পরিস্থিতিতে লেফটেনান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীকে সেনা প্রধানের পদে আনার ঘটনায় কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে এবং চিন সীমান্ত সামাল দিতে অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে ভারত সরকার৷ তাই সেনাপ্রধান পদে উপেন্দ্র দ্বিবেদীর নিয়োগ আসলে লালফৌজের আগ্রাসন রোখার কৌশলী পদক্ষেপ ভারতের৷
    নিজের কর্মজীবনে বহু পুরস্কারও পেয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী৷ ‘পরম বিশেষ সেবা পদক’, ‘অতি বিশেষ সেবা পদক’ এবং তিনটি ‘জিওসি-ইন-সি কম্যান্ডেশন কার্ড’ সহ একাধিক সামরিক স্বীকৃতি রয়েছে তাঁর৷
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)