• কুয়েতে অগ্নিকাণ্ডে মৃত বেড়ে ৫০, ঠাসাঠাসি করে থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল ১৯৬ শ্রমিককে!
    আজ তক | ১৩ জুন ২০২৪
  • কুয়েতে বুধবার ভোরে একটি বিল্ডিংয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৫০ জনেরও বেশি লোক মারা গেছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে বিপুল সংখ্যক ভারতীয়। বলা হচ্ছে, নিহতদের মধ্যে ৪০ জনেরও বেশি ভারতীয় নাগরিক। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ভারতেও চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে। ঘটনায় গাফিলতিকে দায়ী করে বিল্ডিংয়ের মালিক ও অন্যান্য ব্যক্তিদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছে কুয়েত সরকার। সরকার এই অগ্নিকাণ্ডকে লোভের ফল বলে বর্ণনা করেছে।

    হঠাৎ আগুন কীভাবে?
    এনবিটিসি গ্রুপ দক্ষিণ কুয়েতের মাঙ্গাফে এই বিল্ডিংটি ভাড়া নিয়েছিল। কোম্পানিটি তাদের শ্রমিকদের এই ভবনে থাকার ব্যবস্থা করেছিল। এই ভবনে মোট ১৯৬ জন লোক বাস করত, যা ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি। অনেক রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই শ্রমিকদের চাপ দিয়ে এই ভবনে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে।

    নাইট শিফট থেকে ফিরে আসা শ্রমিকরা ঘুমোচ্ছিলেন
    বুধবার ভোর ৪টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ছয় তলা ভবনের রান্নাঘরে আগুন লেগে পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। এখানে বসবাসকারী বেশিরভাগ শ্রমিক রাতের শিফট থেকে ফিরে এসে ঘুমাচ্ছিলেন। অগ্নিকাণ্ডের কারণে অনেকে সুস্থ হওয়ার সুযোগও পাননি। কড়া জায়গার কারণে অনেকে পালানোর সুযোগও পাননি। সেই সঙ্গে প্রাণ বাঁচাতে কেউ কেউ নিজ নিজ ফ্লোর থেকে লাফিয়ে পড়েন।
    দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, বেশিরভাগ মৃত্যুই শ্বাসরোধে হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কুয়েতের আমির মিশাল আল আহমেদ আল জাবের আল সাবাহ। এই অগ্নিকাণ্ডের একটি বড় গাফিলতি যেটি প্রকাশ পেয়েছে তা হল, পুরো ভবনে একটি মাত্র প্রবেশ গেট ছিল। ভবনের ছাদ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা ছাদ ভেদ করেও নিজেদের বাঁচাতে ব্যর্থ হয়।

    প্রশ্ন তুলেছে কুয়েত সরকার?
    এই অগ্নিকাণ্ডের পর কুয়েত সরকার সম্পূর্ণ অ্যাকশন মোডে এসেছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর কুয়েতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ ফাহাদ আল ইউসুফ আল সাবাহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভবন মালিককে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আবাসন আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে। কোম্পানির মালিকরা যাতে খরচ কমাতে পারে সেজন্য নিয়ম লঙ্ঘন করে বিদেশী শ্রমিকদের অত্যন্ত অনিরাপদ অবস্থায় থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে।

    ভবনের মালিক একজন মালয়ালি
    কুয়েতের যে ভবনে আগুন লেগেছে। এটি কেজি আব্রাহাম নামে এক মালয়ালি ব্যবসায়ীর। কেজি আব্রাহাম কেরালার থিরুভাল্লার একজন ব্যবসায়ী, যার কোম্পানি ১৯৭৭ সাল থেকে কুয়েতের তেল ও শিল্পের একটি অংশ। নিহত শ্রমিকরা এ কোম্পানিতে কাজ করতেন।

    কুয়েতের অর্থনীতি বিদেশি শ্রমিকদের ওপর নির্ভরশীল
    কুয়েতের অর্থনীতি মূলত বিদেশী শ্রমিকদের উপর নির্ভরশীল, যারা নির্মাণ শিল্পে প্রচুর পরিমাণে কাজ করে। কুয়েতে বিপুল সংখ্যক ভারতীয় বাস করেন। পরিসংখ্যান অনুসারে, প্রায় ১০ লক্ষ ভারতীয় বর্তমানে কুয়েতে বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক, প্রকৌশলী, ডাক্তার, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, সফটওয়্যার বিশেষজ্ঞ এবং প্রযুক্তিবিদ।
    এটিকে কুয়েতের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে। এর আগে ২০০৯সালে প্রতিশোধ নেওয়ার উদ্দেশ্যে একটি মহিলা কুয়েতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে আগুন দিয়েছিলেন, যাতে ৫৭ জন মারা যায়।

     
  • Link to this news (আজ তক)