ফি বছর বর্ষায় ঝাড়খণ্ডের বৃষ্টির জল এসে জমে নিশিন্দ্রা-সহ অন্তত ১২টি গ্রামের জমিতে। তাতে ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেই সমস্যা কাটাতে দীর্ঘ দিন ধরে আলোচনা চলছিল জেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসীদের সঙ্গে। তারই সমাধান সূত্র মিলেছে। ওই কাটানে সেতু ও ক্যানাল গড়তে রাজ্য সরকারকে ১৫ কোটি টাকা দিচ্ছে এনটিপিসি। ইতিমধ্যেই গত তিন মাসে ৭ কোটি টাকা তারা জমা দিয়েছে জেলা প্রশাসনকে। এনটিপিসি-র ২৯৭ একর জমিও দেওয়া হচ্ছে এর জন্য।
ফরাক্কা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মানব সম্পদ শাখার অধিকর্তা অলোককুমার রণবীর বলেন, “কাটান এলাকায় নিশিন্দ্রা ও কেন্দুয়ায় দু’টি অ্যাশ ডাইক রয়েছে এনটিপিসির। প্রতি বছর ঝাড়খণ্ড থেকে পাহাড়ি জল বর্ষার সময় ধেয়ে আসে ফরাক্কায় এই কাটান এলাকা দিয়ে। তারই সমাধান সূত্র হিসেবে এই সেতু ও ক্যানাল তৈরির সিদ্ধান্ত।”
ফরাক্কার প্রাক্তন বিধায়ক মইনুল হক বলেন, ‘‘ভালয় ভালয় সমস্যাটি মিটলে ফরাক্কা ও ঝাড়খণ্ডের বহু মানুষ উপকৃত হবেন। প্রতি বছর কাটানের ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচবেন মানুষ।”
তিনি জানান, ঠিক হয়েছে রাজ্য সরকার জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সে কাজ করবে। এনটিপিসি তাদের পর্যাপ্ত জমি ও অর্থ জোগাবে। কাটানে ওই সেতু গড়ার জন্য একটি প্ল্যান এস্টিমেট আগেই তৈরি করে দিয়েছে জেলা প্রশাসনের পূর্ত দফতর। মাস খানেকের মধ্যেই জেলা প্রশাসনের দেওয়া ডিটেলস প্রজেক্ট রিপোর্ট মতো ১৫ কোটি টাকা জেলা প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
নিশিন্দ্রার স্থানীয় বাসিন্দা অমল মিশ্র বলছেন, “পাশেই এনটিপিসির ছাই গাদা। ফরাক্কা ব্যারাজ তৈরির সময় এই এলাকায় একটি নিকাশি নালা ও গেট ছিল। ঝাড়খণ্ডের জল এলে গেট খুলে দেওয়া হত। রেল লাইনের পাশ দিয়ে ছিল নয়ানজুলিও। সমস্ত জল এই দুই পথ দিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই বেরিয়ে যেত। কিন্তু সমস্ত নিকাশি বন্ধ হয়ে গিয়েছে এনটিপিসির ছাইয়ে। ফলে জল বেরতে না পেরে ফি বছর রাস্তা এই ভাবে ভেঙে দিয়ে জল বেরিয়ে যাচ্ছে।”
অলোককুমার জানান, নিশিন্দ্রা গ্রামের মাঠ বরাবর একটি ক্যানাল কাটা হবে। সেই ক্যানাল দিয়ে ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে ধেয়ে আসা জল প্রস্তাবিত ক্যানাল বেয়ে ফিডার ক্যানালে গিয়ে পড়বে। তার উপর দিয়ে গড়া হবে একটি সেতু। তা হলে দীর্ঘ দিনের কাটান সমস্যা মিটে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার সেতু নির্মাণের দায়িত্ব নিয়েছে। প্রয়োজনীয় জমিতে অবশ্য জবরদখল রয়েছে।