দল ও প্রশাসন নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ টানাপড়েন আরও জটিলতার দিকে এগোচ্ছে কি না, ফের দেখা দিচ্ছে সেই প্রশ্ন। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘অনমনীয়’ মনোভাবে তেমনই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে তৃণমূলের একাংশে। দলীয় সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক সব বিষয়ই ফের নিজের হাতে নিয়ে সেই বার্তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
লোকসভা নির্বাচনে দলের ভাল ফলের পরে সামগ্রিক ভাবেই বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী। প্রশাসনিক স্তরে রদবদল এবং কাজকর্ম পরিচালনায় নিজস্ব ভঙ্গিতেই এগোচ্ছেন তিনি। দলের একাংশের দাবি, এ বারের ফল প্রকাশের পরে কেটে যাওয়া এক সপ্তাহে দল ও প্রশাসন সম্পর্কে তাঁর এই মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা। সেই কারণেই নতুন করে অভ্যন্তরীণ ‘জটিলতা’ মাথা তুলেছে। ওই অংশের মতে, নির্বাচনের পরে দলীয় স্তরে পূর্ণাঙ্গ কোনও বিশ্লেষণ না হলেও মমতা ইতিমধ্যেই সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক কাজ চিহ্নিত করে ফেলেছেন। এবং দলীয় বৈঠকে যেমন প্রাথমিক কিছু কাজের কথা বলেছেন, তেমনই আমলা মহলেও নিজের ভাবনা পৌঁছে দিয়েছেন। একক ভাবেই তিনি এই প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। তা ঘিরেই এই পর্বের ‘জটিলতা’ তৈরি হয়েছে।
বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যে একটি বড় সরকারি প্রকল্পের সূচনা করার কথা মমতার। ডিসেম্বর মাস থেকে কেন্দ্রের আবাস প্রকল্পের আটকে থাকা কাজ শুরুর এই পরিকল্পনা অবশ্য আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই প্রকল্পের সঙ্গে দলের রাজনৈতিক ভাবনাও জড়িয়ে রয়েছে। দলের একাংশের দাবি, সামগ্রিক ভাবে এ সব নিয়েই দল ও সরকারের মধ্যে সমন্বয় তৈরি করে এগোনোর পক্ষে ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তার কোনও আভাস না পাওয়ায় তিনি কিছুটা সরে থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন। আবাস প্রকল্পে বকেয়া টাকা নিয়ে ভোটের কয়েক মাস আগে থেকেই জনমত সংগঠিত করতে নেমেছিলেন অভিষেক। সেই সূত্রেই সরকারি কাজে দলের ভাবনাকে জুড়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তা না হওয়ায় দলের অন্দরে নতুন করে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে।