• আবাসের টাকা আটকে থাকায় রাজনৈতিক ফায়দা তুলেছে তৃণমূল! এ বার কি বকেয়া দেবেন ‘মামাজি’?
    আনন্দবাজার | ১৪ জুন ২০২৪
  • পশ্চিমবঙ্গে একশো দিনের কাজ ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে কেন্দ্র টাকা আটকে রাখায় বিজেপিকে কি তার রাজনৈতিক মূল্য দিতে হয়েছে? লোকসভা নির্বাচনের পরে মোদী সরকারের অন্দরমহলে এ নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে।

    তৃতীয় মোদী সরকারে গ্রামোন্নয়ন ও কৃষি মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। মোদী সরকারের অন্দরমহলের একটি ধারণা, একশো দিনের কাজ এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় টাকা আটকে থাকায় তৃণমূল কংগ্রেস তার রাজনৈতিক ফায়দা তুলেছে। লোকসভা নির্বাচনে বঙ্গে বিজেপির আসন গত নির্বাচনের ১৮টি থেকে ১২টি-তে নেমে আসার পিছনে ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’ নিয়ে তৃণমূলের প্রচার অন্যতম কারণ হতে পারে। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে টাকা আটকে রেখেছিল। তৃণমূলকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে কাঠগড়ায় তোলাই ছিল এর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। কিন্তু টাকা আটকে থাকার ফল ভুগতে হয়েছে আমজনতাকে আর তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের ক্ষোভকে বিজেপির বিরুদ্ধে হাতিয়ার করেছে।

    সরকারি সূত্রের খবর, শিবরাজ গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্বে আসার পরে এখন পশ্চিমবঙ্গের টাকা আটকে রাখার বিষয়ে পর্যালোচনা হবে। ২০২২-এর মার্চ মাস থেকে পশ্চিমবঙ্গে একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রয়েছে, বকেয়া টাকার পরিমাণ ৫৫৫৩ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণ প্রকল্পে বকেয়া টাকার পরিমাণ ৮৪১২ কোটি টাকা। ফলে দুই প্রকল্প মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রের কাছে পাওনা রয়েছে।

    কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘রোজগার নিশ্চয়তা আইন ও আবাস যোজনা প্রকল্পের নির্দেশিকা মেনেই টাকা নয়ছয় ও অনিয়মের জেরে পশ্চিমবঙ্গের টাকা আটকে রাখা হয়েছিল। এখন টাকা মঞ্জুর করতে হলে পশ্চিমবঙ্গকেও কেন্দ্রের নিয়মকানুন মেনে পদক্ষেপ করতে হবে। তবে এ কথা ঠিক, এর রাজনৈতিক দিকটিও সরকারকে ভাবতে হচ্ছে।’’ বকেয়া অর্থ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, এ বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের আমলাদের মধ্যে বৈঠক হবে। একাধিক বৈঠক হলেও সমাধানসূত্র বার হয়নি। নতুন মন্ত্রী আসার পরে জট কাটার সম্ভাবনা দেখছেন গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কর্তারা।

    এত দিন উত্তরপ্রদেশের গিরিরাজ সিংহ গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের মন্ত্রী ছিলেন। তৃণমূলের দাবিদাওয়া নিয়ে তাঁর অবস্থান যথেষ্ট কড়া ছিল। সাংসদদের ধর্না, রাজ্যের মন্ত্রীর দরবারেও লাভ হয়নি। এ বার গিরিরাজকে বস্ত্র মন্ত্রকে পাঠানো হয়েছে। আর তাঁর প্রতিমন্ত্রী নিরঞ্জন জ্যোতি ভোটে হেরেছেন।

    মধ্যপ্রদেশের ‘মামাজি’ শিবরাজ এখন কী অবস্থান নেন, তৃণমূল শিবিরও তা নিয়ে কৌতূহলী। ২৪ জুন থেকে সংসদের প্রথম অধিবেশনের সময়ে তৃণমূল সাংসদেরা শিবরাজের কাছে ফের দরবার করতে যাবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)