রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: লোকসভা ভোটে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসন থেকে পরাজিত হয়েছেন দিলীপ ঘোষ। হারের নেপথ্যে মেদিনীপুর আসন থেকে তাঁকে সরানো নিয়ে প্রকাশ্যে সরবও হয়েছেন। নাম না করলেও দিলীপের নিশানায় যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, তা স্পষ্ট। এর মাঝে শুক্রবার বিকেলে হঠাৎ করেই বিধানসভায় (Assembly) পৌঁছে যান প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ। কিন্তু বিধানসভায় এলেও বিরোধী দলনেতা বা বিজেপি পরিষদীয় দলের ঘরে তিনি ঢুকলেন না। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সোজা গিয়ে বসলেন বিধানসভার রিপোর্টারস রুমে। সেসময় অবশ্য বিধানসভায় ছিলেন না বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বিধানসভায় দিলীপের আসার খবর দলের তরফে জানানো হলেও, কোনও বিধায়করাই উপস্থিত ছিলেন না। দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) আসার কিছুক্ষণ আগেই বেরিয়ে যান সাংসদ মনোজ টিগ্গা। ফলে শুভেন্দুর পরিষদীয় দল এদিন দিলীপ ঘোষকে কার্যত এড়িয়ে গেল কী না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। আর সেই জল্পনায় সিলমোহর দিয়েছেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) ঘনিষ্ঠ বিজেপি বিধায়ক অশোক দিন্দা। নাম না করে দিলীপকে নিশানা করে অশোক দিন্দার বক্তব্য, ‘‘হেরে যাওয়ার পর অনেকে অনেক কিছু বলেন। জো জিতা ওহি সিকান্দার। কে কীভাবে জিতল, কে কেন জিতল না, কে কাঠি করল ওসব কথাবার্তার কোনও মূল্য নেই। পাবলিককে গরম করে কোনও লাভ নেই। আপনাকে মানুষ ভোট দেয়নি, এটা মেনে নিয়ে আগামী দিনে সংগঠনে মন দিতে হবে।’’ শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ ময়নার বিধায়ক এদিন যেভাবে দিলীপকে নিশানা করেছেন তাতে দলের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব আবার সামনে চলে এসেছে। দিলীপ ও শুভেন্দু শিবিরের মধ্যে ফাটল আরও চওড়া হল বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিন বিকেলে বিধানসভা হয়ে রাজ্য বিজেপি (BJP) দপ্তরে গেলে সেখানে দিলীপকে ঘিরে স্লোগান তোলেন তাঁর অনুগামীরা। দিলীপকে ফের ?রাজ্য সভাপতি চাই? বলে স্লোগান তোলা হয়। দিলীপের ছবি দেওয়া ব্যাজ পরেও পুরনো কর্মীদের দেখা যায় মুরলীধর সেন লেনের অফিসে। পুরনো কার্যকর্তারা দিলীপের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তাঁর পাশে ছিলেন উত্তর কলকাতা জেলার প্রাক্তন সভাপতি শিবাজী সিংহ রায়। রাজ্য দপ্তরেও অবশ্য সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেননি প্রাক্তন সাংসদ। অন্যদিকে, মনোজ টিগ্গা সাংসদ হয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবারই বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন। এবার বিধানসভায় নতুন করে পরিষদীয় দলনেতা খুঁজে নিতে হবে বিজেপিকে। কে হবেন, তা ঠিক করতে ১৮ তারিখ বৈঠকে বসবে গেরুয়া শিবির।