• 'আচমকাই সব চলে গেল'! পর্দায় টেনিস রাজার গল্প, অনুরাগীদের ইঙ্গিত অল্প!
    ২৪ ঘন্টা | ১৫ জুন ২০২৪
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সাল ২০২২। শেষবার কোর্টে নেমেছিলেন রজার ফেডেরার (Roger Federer)। বিগত দুই বছর টেনিসের বাইরে কিংবদন্তি। ২০ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক ২৪ বছরে ১৫০০-এর ওপর ম্যাচ খেলার পর টেনিসকে আলবিদা বলেছিলেন। টেনিস রাজা রজারের গল্প এবার দেখা যাবে পর্দায়। সর্বকালের অন্য়তম টেনিস খেলোয়াড়ের জীবন ফুটে উঠছে তথ্য়চিত্র 'ফেডেরার: টুয়েলভ ফাইনাল ডেজ'-এ (Federer: Twelve Final Days)। আসিফ কাপাডিয়া ও জো সাবিয়ায় (Asif Kapadia and Joe Sabia) নির্দেশনায় অ্যামাজন প্রাইমে (Amazon Prime) স্ট্রিম করে দেখা যাবে ২০ জুন থেকে। তাঁর আগে সুইস সম্রাট ফেডেরারই অনুরাগীদের ইঙ্গিত দিলেন অল্প!ফেডেরারের পর্দার গল্প ঠিক কেমন হতে চলেছে? অলিম্পিকডটকম-এ দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফেডেক্স বলেন, 'এটা একটা ফিল-গুড ফিল্ম হতে পারত। কিন্তু এখানে অবসরকালীন যন্ত্রণা এবং দুর্বলতার কথা আছে। আছে আনন্দ এবং সেই সঙ্গে আপনাদের থেকে পাওয়া আনন্দ এবং কৃতজ্ঞতার কথা। আমার মনে হয় টুয়েলভ ফাইনাল ডেজ-এ অনেক কিছু আছে। ছবির কিছু অংশে সম্ভবত অনেক লোকের সঙ্গে অনুরণিত হবে। অন্য কিছু অংশে সম্ভবত না। যেমন, কেন রজার সারাক্ষণ কাঁদে? কেন একজন টেনিস প্লেয়ার হয়েও তাঁকে এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সংগ্রাম করতে হয়েছে। আমি কী পেয়েছি। সেই তিন বছর বয়স থেকে টেনিস খেলছি। আট বছরে প্রথম টুর্নামেন্ট। এটাই তো জীবন ছিল। যতবার প্র্যাকটিস কোর্টে নেমেছি ততবার নিজেকে সেরা প্লেয়ার হতে দেখতে চেয়েছি। ততবার উন্নতি করতে চেয়েছি। আচমকাই সব চলে গেল।'  

    ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের শেষদিকের ঘটনা। টেনিসকে বিদায় জানানোর জন্য লেভার কাপের মঞ্চ বেছে নিয়েছিলেন ফেডেরার। আয়োজকরা বেশ কিছু বন্দোবস্ত করেছিলেন ফেডেরারের ফেয়ারওয়েল ম্য়াচে। ফেডেরার খেলতে নেমেছিলেন তাঁর কোর্টের প্রধান 'শত্রু' ও বাস্তবের দারুণ বন্ধু রাফায়েল নাদালকে সঙ্গে নিয়ে। গ্যালারিতে বসেছিলেন নোভাক জকোভিচ, অ্যান্ডি মারেরা। ফেডেরাররদের প্রতিপক্ষ ছিলেন ফ্রান্সেস টিয়াফো এবং জ্যাক সফ জুটি। দীর্ঘদিন বাদে চোট সারিয়ে ফেরা নাদাল এবং ফেডেরার জুটি জিততে পারেননি সেদিন। প্রথম সেটে ৬-৪ পয়েন্টে জিতেও ম্যাচ জেতা হয়নি। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষেও হারতে হয়েছিল ৬-৪, ৬-৭, ৯-১১ ব্যাবধানে। তবে ম্যাচের ফলাফল হয়তো সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ ছিল না সেদিন। ফেডেরার হারলেন, না জিতলেন সেটা হয়তো কেউ দেখতেও আসেননি। সবাই এসেছিলেন টেনিসের রাজাকে বিদায় জানাতে। আর বিদায়লগ্নে শুধু রজার কাঁদেননি। পাশে বসে অঝোরে কেঁদেছিলেন নাদালও। আর পুরো গ্য়ালারির চোখ ছলছল করেছিল এই দৃশ্য় দেখে।ফেডেরারের অবসরের সঙ্গেই টেনিসের এক যুগের অবসান ঘটেছিল। ৬টি অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, ১টি ফরাসি ওপেন, ৮টি উইম্বলনডন ও ৫টি যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের কথা ফেডেরারের বায়োডেটাতে লেখা থাকবে। তবে লেখা থাকবে না যেটা, সেটা হল, ফেডেরার টেনিস খেলার স্বপ্ন দেখিয়েছেন শয়ে শয়ে খেলোয়াড়কে। তাঁকে দেখেই ব়্যাকেট ধরেছেন অনেকে।৫ কারণে রাজা রজার আজীবন টেনিসের সুপারম্যান হয়েই থাকবেনএক) পুরুষদের টেনিসে ফেডেরার দীর্ঘ সময় ধরে সর্বাধিক গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক ছিলেন। তাঁর আইডল ছিলেন টেনিস কিংবদন্তি পিট সাম্প্রাস। ফেডেরারের আগে সাম্প্রাসের ঝুলিতে ছিল ১৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম। মনে করা হত এই রেকর্ড ভাঙা যাবে না। তবে ফেডেরার সব ভুল ভেঙে ইতিহাস লিখেছিলেন।দুই) ফেডেরার টানা ২৩বার গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল খেলার পাশাপাশি ৩৬ বার কোয়ার্টার-ফাইনালে গিয়েছিলেন। যা চমকপ্রদ বললেও কম। ফেডেরার ১০৩টি এটিপি সিঙ্গল খেতাব জিতেছেন। ২৮টি এটিপি মাস্টার্সও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। ছ'বার এটিপি ফাইনালসে গিয়েছেন তিনি। এটিপি ট্যুরে ১৫২৬টি ম্য়াচে তাঁর ১২৫১-২৭৫ (৮২%) সিঙ্গলস রেকর্ড।তিন) ২০০৩ সালে ফেডেরার প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম (উইম্বলনডন) জেতেন ২১ বছর বয়সে। এর ১৪ মাস পর সুইস রাজপুত্র নিজেরে একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে ফেলেন টেনিসের দুনিয়ায়। ২০০৪-০৭, ফেডেরার ছিলেন ফর্মের শীর্ষে। ২৪৭-১৫ (৯৪%) রেকর্ড। বুঝিয়ে দেয় পুরুষদের টেনিসে 'গ্রেটনেস' শব্দের তাৎপর্য।চার) ফেডেরার ২০০৮ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক্সে পুরুষদের ডাবলসেও নিজের জাত চিনিয়ে ছিলেন। স্ট্যানিসস্লাস ওয়ারিঙ্কার সঙ্গে জুটি বেঁধে সোনা জিতেছিলেন। ফেডেরার টানা ৩১০ সপ্তাহ টেনিসের ক্রমতালিকায় ছিলেন একে।পাঁচ) আটবার (২০০৩-০৭, ২০০৯, ২০১২, ২০১৭) উইম্বলডন খেতাব জয়ের বিরল নজিরও রয়েছে ফেডেরারের বায়োডেটায়। ফেডেরারই একমাত্র প্লেয়ার যিনি ক্লে, গ্রাস ও হার্ড কোর্টের প্রতিটি বিভাগে ১০টি করে খেতাব জিতেছেন। বলাই বাহুল্য প্রথম প্লেয়ার হিসাবে ২০১৮ সালে ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম স্পর্শ করেছিলেন।

     
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)