অর্ণব আইচ: জমি দখলের টাকায় ৮৭ লক্ষ টাকার সোনা কিনেছিল শেখ শাহজাহান। কিনেছিল চারটি বিলাসবহুল গাড়িও। একই সঙ্গে চারজনের নামে মোট ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকার সম্পত্তি কেনা হয়েছিল শাহজাহানের তরফে। সম্প্রতি সন্দেশখালির শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে পেশ করা চার্জশিটে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
চার্জশিটে ইডির দাবি, জমি দখলের টাকায় শাহজাহানের সম্পত্তি ও টাকা লেনদেনের পরিমাণ ১৯৯ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা। এছাড়াও শাহজাহানের সঙ্গী শিবু হাজরা যে ৫০ লাখ টাকা শাহজাহানকে দিয়েছে, সেই প্রমাণ পেয়েছে ইডি। তার ভিত্তিতে ইডির দাবি, শাহজাহানের সম্পত্তির মূল্য ২০০ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও শাহজাহানের ভাই শেখ আলমগিরের ২০ কোটি টাকা, সঙ্গী শিবু হাজরার ১০ কোটি টাকা ও অন্য সঙ্গী দিদার বক্সের ৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকার সম্পত্তির হদিশ পেয়েছেন ইডির গোয়েন্দারা।
অভিযোগ, জমি দখল করে এই টাকা আয়ের জন্য শাহজাহান, আলমগির, শিবু হাজরা বেআইনি অস্ত্র দিয়ে খুন, খুনের চেষ্টা করেছে। শাহজাহান নিজের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে জেলা পুলিশের কাছে হওয়া একাধিক মামলা থেকে নিজের ও তার ভাই এবং সঙ্গীদের নাম ‘ডিলিট’ করেছে বা মুছে ফেলেছে। জেলা ও পঞ্চায়েত স্তরে বিভিন্ন পদে শাহজাহান নিজের পছন্দমতো লোকেদের বসায়। সেই কারণে নিজের প্রভাব খাটাত সে।
ইডির দাবি, তনুশ্রী, জয়ন্তী, চন্দ্রদীপ-সহ চারজনের নামে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে চারটি অ্যাকাউন্টের সন্ধান মেলে। এই ব্যক্তি ও মহিলারা শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ। ওই চারটি অ্যাকাউন্টের মধ্যে দুটি থেকে ৩৫ লাখ টাকা করে ৭০ লাখ টাকা ও বাকি দুটি থেকে ২০ লাখ টাকা করে ৪০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। মোট ১ কোটি ১০ লাখ টাকা খরচ করে এই চারজনের নামে শাহজাহান সম্পত্তি কেনে বলে অভিযোগ।
চার্জশিটে ইডি জানিয়েছে, দুর্নীতির টাকায় শাহজাহান ৮৬ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকার সোনা কেনে। এ ছাড়াও সে কেনে চারটি গাড়ি। শাহজাহানের ঘনিষ্ঠদের দাবি, ওই চারটি গাড়ির মধ্যে একটি সে একজন বিধায়ককে উপহারও দেয়। এই বিষয়টি ইডি খতিয়ে দেখছে। শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী শিবু হাজরার সঙ্গে শাহজাহানের মাছের কারবারের সংস্থা শেখ সাবিনার সরাসরি যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে।