বাম-কংগ্রেস জোটে লোকসভা ভোটের ‘টানাপড়েন’ বজায় রইল বিধানসভার উপনির্বাচনেও। লোকসভা ভোটে রাজ্যের দু’টি আসনে বামফ্রন্টের শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের সঙ্গে কংগ্রেসের ‘ঐক্য’ হয়নি। তার পরেই এসে পড়েছে চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। সেখানে পূর্ণাঙ্গ জোট হয় কিনা, সেদিকে নজর ছিল। শনিবার পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, ১০ জুলাই রাজ্যের চারটি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনের মধ্যে দু’টিতে প্রার্থী দেওয়া হবে। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে এবং উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা।
শুক্রবার বামফ্রন্টের বৈঠক শেষে কংগ্রেসের জন্য রায়গঞ্জ বিধানসভা আসনটি ছেড়ে রেখে বাকি তিনটি কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল বামেরা। জানানো হয়েছিল, কলকাতার মানিকতলা এবং নদিয়ার রানাঘাট দক্ষিণে সিপিএম লড়াই করবে। উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায় লড়বে ফরওয়ার্ড ব্লক। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কংগ্রেসের বাগদায় লড়ার কথা জানানোর ঘোষণা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম শুক্রবার জানিয়েছিলেন, কংগ্রেসের সঙ্গে কথা বলেই রায়গঞ্জ ছেড়ে রেখে তিন কেন্দ্রে বামফ্রন্টের প্রার্থী ঠিক করা হয়েছে। বাগদায় বামফ্রন্টের তরফে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী করা হয়েছে গৌরাদিত্য বিশ্বাসকে। তার পরেই কংগ্রেসের তরফে বাগদায় লড়ার বার্তা এল। যাকে অনেকে পুরুলিয়া এবং কোচবিহারের ‘জবাব’ বলে মনে করছেন। অনেকের মতে, কংগ্রেসের এই ঘোষণা নতুন করে বাম-কংগ্রেস সমঝোতার ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে জল্পনা তৈরি করতে পারে।
প্রসঙ্গত, সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটে সিপিএম, আরএসপি এবং সিপিআইয়ের সঙ্গে ‘সঙ্ঘাত’ না হলেও কোচবিহার এবং পুরুলিয়া আসনে কংগ্রেস-ফরওয়ার্ড ব্লকের লড়াই হয়েছিল। কোচবিহারে ফরওয়ার্ড ব্লক ৩০ হাজার এবং কংগ্রেস প্রায় ১১ হাজার ভোট পেয়েছিল। আর পুরুলিয়ায় কংগ্রেস ১ লক্ষ ২৯ হাজার এবং ফরওয়ার্ড ব্লক সাড়ে ১৪ হাজার ভোট পেয়েছে। ভোটের আগে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু প্রকাশ্যে কোচবিহারে প্রার্থী প্রত্যাহারের জন্য কংগ্রেসের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস তা মানেনি। এ বার কী হবে বাগদায়? বিমান বা অন্য কোনও বামনেতা কি তাঁদের শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের কাছে অনুরোধ করবেন বাগদা আসনটি কংগ্রেসকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য? নাকি ‘কোচবিহার মডেলে’ কংগ্রেসকে অনুরোধ করা হবে আসনটি ছেড়ে দিতে? নাকি লোকসভা ভোটের মতোই জোটসঙ্গীদের লড়াই হবে বাগদায়? আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে দুই শিবির।