রিয়া পাত্র ঝাঁ-চকচকে জীবন যাপনে, দিনে দিনে দুয়োরানির মতোই কি অন্তরালে চলে যাচ্ছে বাংলার একান্ত আপন লোকশিল্প? নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনেরও প্রশ্ন, 'আমাদের মধ্যে কতজন রয়েছি, যাঁরা নিজেদের লোকগান, লোকনৃত্য সম্পর্কে অবহিত?এই প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি নিজে বিব্রত বোধ করি।' এই প্রশ্ন একদিনের নয়, একজনের নয়। তবে, তাদের বাঁচিয়ে রাখতে এবার নয়া উদ্যোগ। বাংলার একান্ত, নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী লোক শিল্প ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ডকুমেন্টেশন এবং ডিজিটালাইজেশনের উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতার সুকৃতি ফাউন্ডেশন এবং জার্মান কনস্যুলেট জেনারেল, কলকাতা। ভারতে এই প্রথম এধরনের কাজ হচ্ছে। কীভাবে নেওয়া হল এই বৃহৎ উদ্যোগ? বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী লোক শিল্পধারা নথিভুক্ত করা হয়েছিল আগেই। এখনকার তরুণ প্রজন্ম হাই রেজোলিউশনের সবকিছু দেখতে অভ্যস্ত, এই ভাবনা মাথায় নিয়ে সেভাবেই ডিজিটালাইজেশনের কাজ করা হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে এইচডি ড্রোন, গোপ্রো, ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা, সাউন্ড ট্র্যাক ইত্যাদি। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার আগে দীর্ঘ গবেষণার কাজ করেছেন পবিত্র সরকার, ডঃ তথাগত চক্রবর্তী, শিবব্রত কর্মকার। সমগ্র বিষয়টি পরিচালনা করেছেন অভিজিৎ দাশগুপ্ত। যাঁর ঝুলিতে রয়েছে ৩টি জাতীয় এবং ৫৬টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার। এই নতুন উদ্যোগের বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, 'জার্মান কনস্যুলেট জেনারেলের সমর্থন ও সহযোগিতা ছাড়া এই স্বপ্নের প্রকল্প সম্পূর্ণ করা সম্ভব হত না। 'এই ভার্চুয়াল জাদুঘরের উদ্বোধন হবে ২০ জুন, ম্যাক্স মুলার ভবনে। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা সঙ্গীতবিদ, সঙ্গীতশিল্পী, সুরকার, নৃতত্ত্ববিদ সকলেই দেখতে পাবেন, উপকৃত হতে পারবেন। বাংলার একান্ত নিজস্ব, আবহমান লোক শিল্পের ধারাগুলিকে ছুঁয়ে থাকতে পারবে যে কোনও প্রজন্ম।