• নিট বাতিলের জল্পনার মাঝে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস ? আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই ?
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৫ জুন ২০২৪
  • দিল্লি, ১৫ জুন ?  ২০২৪ সালের নিট নিয়ে পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের  এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। নিট নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। ধর্মেন্দ্র  প্রধানের দাবি, এখনও পর্যন্ত নিটে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনও প্রমাণ আসেনি। যে অভিযোগ উঠছে, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছেন। বরং ৮ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দেয়, সেদিকেই লক্ষ্য রাখা উচিত।
     
    সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা নিট-এ অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে গোটা দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠতেই এবার প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে প্রবেশিকা পরীক্ষার গোটা প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা এবং স্বচ্ছতা নিয়েও। এই পরিস্থিতিতে নিট ‘দুর্নীতি’ প্রসঙ্গে মুখ  খুলেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী।
     
    এক সংবাদমাধ্যমে একান্ত সাক্ষাৎকারে নিট বাতিল নিয়ে যে জল্পনা তৈরী হয়েছে সে প্রসঙ্গেও মন্তব্য  করেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে বিরোধীদের নিশানা করেছেন তিনি। পরী‌ক্ষা বাতিলের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, ?নিট বাতিলের প্রয়োজনীয়তা কী ? এর  পিছনে বিরোধীদের স্বার্থ রয়েছে। গত বছর নিটে যিনি প্রথম হয়েছিলেন, তিনি তামিলনাড়ুর পড়ুয়া। তামিলনাড়ুর এক গ্রামের বাসিন্দা। আসল অভিযোগ কী, সেটাই বোঝা যাচ্ছে না।? ধর্মেন্দ্রর কথায়, ?কিছু অভিযোগ এবং আলগা তথ্য উঠে আসছে। আমাদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদন্তের জন্য অপেক্ষা করা উচিত। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের জন্য ৮ জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করা যাক। এই নিয়ে লুকোনোর কিছু নেই।?   পরীক্ষার্থীদের আতঙ্কিত না হওয়ার আবেদন জানিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘কিছু অসঙ্গতি প্রকাশ্যে এসেছে। আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। সুপ্রিম কোর্টও একটি রায় দিয়েছে। এর পরে কোনও বিভ্রান্তি থাকা উচিত নয়।’’



    কিন্তু কেন সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ না করা পর্যন্ত অভিযোগ নিয়ে মাথা ঘামায়নি পরীক্ষা পরিচালনা সংস্থা এনটিএ? জবাবে ধর্মেন্দ্র বলেন, ‘‘একথা সত্য নয়। অসঙ্গতি প্রকাশ্যে আসার পরই এনটিএ গ্রেস মার্ক ফর্মুলা চালু করেছিল। সুপ্রিম কোর্টও তা উদ্ধৃত করেছে। তবে, সেই সূত্রে কিছু অসঙ্গতি থেকে গিয়েছিল। কারণ, নম্বর বাড়িয়ে দেখা যায়, ৬ জন পরীক্ষার্থী প্রথম হয়েছেন।’’
    নিটের পরিচালনার প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলার সময় ধর্মেন্দ্র প্রধান জানান, ভারতে ৪৭০০ কেন্দ্রে এবং ভারতের বাইরে ১৪টি কেন্দ্রে ১৩টি ভাষায় এই প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষা দেন ২৩ লক্ষেরও বেশি পরীক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘‘দু’টি কেন্দ্র নিয়ে কিছু অভিযোগ রয়েছে। যাঁরা দুর্নীতি করেছেন, তাঁদের অবশ্যই কঠিন শাস্তি হবে।’’ 
    প্রসঙ্গত, এ বছর নিট-এর ফল প্রকাশ হলে দেখা যায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে ৬৭ জন। এরপরই প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ উঠতে শুরু করে ৬। পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের পাশাপাশি অনেককে গ্রেস মার্কস দেওয়ারও অভিযোগ তোলেন পরীক্ষার্থীরা। এই সরব গোটা দেশ। ২০২৪ সালের নিট পরীক্ষায় ব্যাপক অসঙ্গতির অভিযোগ তুলে পরীক্ষা বাতিল ও কাউন্সেলিং বন্ধের আর্জি জানিয়ে দায়ের হয় একাধিক মামলা। সেই মামলায় প্রশ্নের মুখে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি।
    গত বৃহস্পতিবারই সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র জানিয়েছে, ভুল প্রশ্নের জেরে যে ১৫৬৩ জন গ্রেস মার্কস পেয়েছেন, সেই গ্রেস মার্কস বাতিল করে দেওয়া হবে। ওই ১৫৬৩ জনকে আবার পরীক্ষা দিতে বলা হবে। আগামী ২৩ জুন ফের পরীক্ষায় বসতে হবে ওই পড়ুয়াদের। ফলাফল ঘোষণা ৩০ জুন। তবে যেহেতু নতুন করে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ একটি বিকল্প হিসাবেই দেওয়া হবে পরীক্ষার্থীদের, সেক্ষেত্রে কেউ চাইলে এই পরীক্ষায় না বসতেও পারেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকায় অনিয়ম মেনে নিল কেন্দ্র ? এই প্রসঙ্গে ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন,  যাঁরা চান তাঁরা ৬টি নির্দিষ্ট কেন্দ্রে ফের পরীক্ষা দিতে পারেন।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)