প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে চালের দাম। তার আঁচ পড়ছে আমবাঙালির হেঁশেলে। চালের কারবারিদের দাবি, গত প্রায় এক মাসের ব্যবধানে সাধারণ চালের দাম বেড়েছে কুইন্ট্যাল প্রতি প্রায় চারশো টাকা।
চালের দাম বৃদ্ধির কারণ নিয়ে একাধিক মত কারবারি থেকে মিল মালিকদের। চালের কারবারিরা বলছেন জেলার ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ সাধারণ (স্বর্ণ) ধানের চাল কিনে খান। প্রায় বছর খানেক আগেও ওই চালের ২৫ কেজি প্যাকেটের দাম ছিল ৬৫০-৬৮০ টাকা। চালের দাম বাড়তে বাড়তে গত সেপ্টেম্বর মাসের দিকে সেই বস্তার দাম গিয়ে দাঁড়ায় ৯৩০ থেকে ৯৩৫ টাকায়। মাঝে মাস কয়েক চালের দাম কিছুটা কমে। চালের কারবারিদের দাবি, মাস খানেক আগে স্বর্ণ চাল ২৬ কেজির প্যাকেট বিক্রি হয়েছে ৮১০ থেকে ৮২০ টাকায়। গত প্রায় সপ্তাহ খানেক থেকে সেই চাল বিক্রি হচ্ছে ৯২০ টাকা প্যাকেট।
অন্য দিকে বিভিন্ন মিলের মিনিকিট চালের ২৬ কেজি প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে মান অনুযায়ী ১২০০ থেকে ১২৬০ টাকায়। প্রায় মাস খানেকের ব্যবধানে মিনিকিট চালের দাম কুইন্ট্যাল প্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকা বেড়েছে দাবি চাল বিক্রেতাদের। চালের কারবারিদের দাবি, গত বছর ২৫ কেজি পর্যন্ত চালের উপর ৫ শতাংশ জিএসটি লাগু হয়েছে, সেটাও দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। তা ছাড়া চাষিদের কাছ থেকে বাড়তি দাম দিয়ে সহায়ক মূল্যে চাল কিনেছে সরকার। বিভিন্ন মিল থেকে সরকার রেশনের জন্য চাল কিনছে।
গত মরসুমে আমন ধানের চাষ কম হয়েছিল। বোরোধানের অধিকাংশই মিনিকিট চালের জন্য ব্যবহৃত হয়। ফলে একাধিক কারণে চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী বলে মনে করছেন কারবারিরা।
হরিহরপাড়ার চালের ব্যবসায়ী মির রহমতুল্লাহ বলেন, ‘‘মিনিকিট চালের দাম কিছুটা বেড়েছে সেটা মেনে নেওয়া যায়। তবে সাধারণ মানুষ যে চাল খেতে অভ্যস্ত সেই চাল মাস খানেকের ব্যবধানে কুইন্ট্যাল প্রতি প্রায় চারশো টাকা বেড়েছে।’’ এক চালের পাইকার আব্দুল জাব্বার বলেন, ‘‘বর্ধমান থেকে চাল আসে। মিল মালিকেরা বলছেন চাহিদার তুলনায় জোগান কম। তাই যেমন দামে কিনছি, অল্প লাভ রেখে তা বিক্রি করতে হচ্ছে।’’ মিল মালিকেরা বলছেন, ‘‘বেশি দামে ধান কিনতে হচ্ছে। জিএসটি সহ অন্য খরচ বেড়েছে। অন্যদিকে ধানের জোগান কম। ফলে চালের দামও বাড়ছে।’’
জেলার এক সহকারী কৃষি বিপণন আধিকারিক বলেন, ‘‘একাধিক কারণে চালের দাম বাড়ছে। তবে দাম নিয়ে যাতে কালোবাজারি না হয় সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।’’