হুক্কা বার বন্ধ করা যাচ্ছে না, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে হতাশ মেয়র ফিরহাদ হাকিম
আনন্দবাজার | ১৬ জুন ২০২৪
কলকাতা শহরে চলবে না কোনও হুক্কা বার— এমনই কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু, কলকাতা হাই কোর্টে গিয়ে হুক্কা বার মালিকেরা পাল্টা তা খোলার আদেশ নিয়ে এসেছেন। শনিবার কলকাতা পুরসভায় ‘রুফটপ রেস্তরাঁ’ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে হুক্কা বারের প্রসঙ্গ টেনে আনেন স্বয়ং মেয়র। এ ক্ষেত্রে অবশ্য তাঁর হতাশাই প্রকাশ পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘‘রুফটপে যে সব রেস্তরাঁ তৈরি হচ্ছে, তা তো সবই হুক্কা বার। ছেলেপিলেরা নেশা করছে। কিন্তু হাই কোর্ট বলে দিয়েছে। আমরা সবাই বিশ্বাস করি, হুক্কা বারে যাওয়াটা অন্যায়। কিন্তু কোর্টে চলে গেল, কোর্ট থেকে অনুমতি নিয়ে নিল।’’ মেয়র আরও বলেন, ‘‘আমি অনুমতি দিইনি। কিন্তু তারা অনুমতি পেয়ে গিয়েছে। আমি বন্ধ করলে তারা কোর্টে গিয়ে আমাকে থাপ্পড় খাওয়াবে। মানুষের বিচার কী বলছে, তা আদালত দেখবে না। আইন কী বলছে, আদালত তা-ই দেখবে।’’ প্রসঙ্গত, গত সোমবার কলকাতা ও বিধাননগরে হুক্কা বার বন্ধ করা নিয়ে রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, এ বিষয়ে আগে সিঙ্গল বেঞ্চ যে রায় দিয়েছিল, তাতে হস্তক্ষেপ করার কোনও কারণ নেই। শুনানির সময়ে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘হুক্কা বারের থেকে অক্সিজেন বার খুলুন। তবে শেষ পর্যন্ত আদালত জানিয়ে দেয়, বন্ধ হচ্ছে না হুক্কা বার।’’ এই নির্দেশিকা প্রসঙ্গেই মন্তব্য করেছেন মেয়র ফিরহাদ।
বছর দু’য়েক আগে বিধাননগর এবং কলকাতা পুরসভা একযোগে হুক্কা বার নিয়ে আপত্তি তোলে। ২০২২-এর ডিসেম্বরে শহরের সমস্ত হুক্কা বার বন্ধের ঘোষণা করে কলকাতা পুরসভা। সেই মতো পুলিশও পদক্ষেপ শুরু করে। পুরসভা এবং পুলিশের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কয়েক জন হুক্কা বার মালিক। তাঁদের বক্তব্য ছিল, পুরসভার আইনে হুক্কা বার বন্ধের বিষয়ে কিছু বলা নেই। সিঙ্গল বেঞ্চ জানায়, হুক্কা বার বন্ধ করতে হলে রাজ্য বা পুরসভাকে নতুন আইন আনতে হবে। তার আগে পর্যন্ত হুক্কা বারের বিরুদ্ধে পুলিশ পদক্ষেপ করতে পারবে না। সঙ্গে আদালত জানায়, যে হেতু ২০০৩ সালের ‘সেন্ট্রাল টোব্যাকো আইন’ মেনে হুক্কা বার চালানো হয়, তাই তা বন্ধ করা যাবে না। হাই কোর্টের সেই রায়কেই বহাল রাখে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আর তাতেই হতাশা প্রকাশ করেছেন ফিরহাদ।