আজকাল ওয়েবডেস্ক : পথ দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ডান পা হারাতে বসা এক ব্যক্তিকে জটিল অপারেশন করে বাঁচালেন মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকরা। মহকুমা স্তরের একটি হাসপাতালে এমন জটিল অপারেশন করে এক আহতের পা বাঁচানোর ঘটনাকে তারিফ করেছে জেলার চিকিৎসক মহল। শনিবার রাত সাড়ে নটা নাগাদ পেশায় ব্যবসায়ী বছর তিপ্পান্নর হরেকৃষ্ণ মন্ডল কান্দি শহরে নিজের দোকান বন্ধ করে তিলিপাড়া এলাকায় নিজের ভাড়া বাড়িতে সাইকেল চালিয়ে ফিরে আসছিলেন। সেই সময় কান্দি বাসস্ট্যান্ড এলাকার কাছে তাকে একটি ডাম্পার গাড়ি তাকে ধাক্কা মারে। এই ঘটনায় হরেকৃষ্ণবাবুর ডান পা গুরুতর জখম হয়। কান্দি মহকুমা হাসপাতালে এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, আহত ওই ব্যক্তিকে যখন হাসপাতালে আনা হয় তখন তার শরীর থেকে অনেক রক্তক্ষরণ হয়ে গেছে। রোগী নেতিয়ে পড়েছিলেন। দুর্ঘটনার অভিঘাতে ওই ব্যক্তির গোড়ালি থেকে পায়ের পাতা প্রায় পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এইরকম ক্ষেত্রে সাধারণত মহকুমা হাসপাতালে ডাক্তাররা কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে আহত ব্যক্তিকে উচ্চতর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে দেন। কিন্তু আহত ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে কান্দি হাসপাতালের জেনারেল সার্জেন (স্পেশালিস্ট) ডাঃ প্রবীর কুমার সাহা কিছুটা 'ঝুঁকি' নিয়েই অপারেশন করতে রাজি হয়ে যান। রোগীকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে সময় নষ্ট করার পরিবর্তে কান্দি হাসপাতালের এনেস্থেটিস্ট, নার্সিং স্টাফ এবং অন্য কয়েকজন ডাক্তারদের একটি টিম নিয়ে প্রায় দু'ঘণ্টা ধরে হরেকৃষ্ণ মন্ডলের পায়ে জটিল অপারেশন করেন। দীর্ঘ অপারেশনের পর হরেকৃষ্ণ মন্ডল কিছুটা দুর্বল থাকলেও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। তাকে ভর্তি রাখা হয়েছে ওই হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে। হাসপাতালের ডাক্তাররা আশাবাদী- সময়মত অপারেশন হয়ে যাওয়ার ফলে হরেকৃষ্ণবাবু সুস্থ হয়ে উঠলে প্রায় স্বাভাবিক চলাফেরার ক্ষমতা ফিরে পাবেন। আহত হরেকৃষ্ণ মন্ডলের স্ত্রী মমতা মণ্ডল বলেন,"শনিবার রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার সময় আমার স্বামী দুর্ঘটনার মুখে পড়েন। দীর্ঘক্ষণ তিনি রাস্তাতেই পড়েছিলেন। পরে কিছু লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করান। "তিনি বলেন,"প্রথমে ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন আমার স্বামীর পা কেটে বাদ দিতে হবে। তবে দেবদূতের মতো অবতীর্ণ হয়ে ডাঃ প্রবীর কুমার সাহা আমার স্বামীর পায়ের অপারেশন করেছেন। হাসপাতালে চিকিৎসকরা আমাকে জানিয়েছেন স্বামী সুস্থ হয়ে উঠলে তিনি তার স্বাভাবিক চলাফেরার ক্ষমতা ফিরে পাবেন। ডাক্তারবাবুদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।"