• নিট পরীক্ষায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব বিরোধীরা, সুর বদল শিক্ষামন্ত্রীর...
    আজকাল | ১৭ জুন ২০২৪
  • বীরেন ভট্টাচার্য, নয়া দিল্লি: নিট পরীক্ষা নিয়ে দেশজুড়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন পরীক্ষার্থী থেকে শুরু করে পড়ুয়ারা। পাশাপাশি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছে। ফলে, নিট নিয়ে দুই তরফের সাঁড়াশি আক্রমণের সামনে পড়েছে এনডিএ সরকার। তারমধ্যে আজ নিট নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান স্বীকার করে নিয়েছেন বেশ কিছু জায়গায় দুর্নীতি হয়েছে। তাঁর আশ্বাস, নিট দুর্নীতিতে পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা ন্যাশনাল টেষ্টিং এজেন্সির কোনও আধিকারিকের নাম জড়ালে তাঁর বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।এদিন ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, 'সুপ্রিম কোর্ট ১,৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীর নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। দুই জায়গা থেকে দুর্নীতির খবর এসেছে। আমি পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের জানাচ্ছি, সরকার এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। এমনকী, যদি এনটিএ এর কোনও আধিকারিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ধরা পড়ে, তাহলে তাঁকেও রেয়াত করা হবে না। এনটিএ এর ব্যাপক উন্নতি সাধন প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন। দোষীদের কঠোর সাজা দেওয়া হবে।' যদিও দিন কয়েক আগে তিনি দাবি করেছিলেন এনটিএ এর বিরুদ্ধে কোনও ত্রুটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকী, ফের পরীক্ষা নেওয়ার কথাও সরকার ভাবছে না বলে জানিয়েছিলেন তিনি। যদিও শীর্ষ আদালতের রায়ের পরেই পাল্টি খেলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। ৪ জুন লোকসভা ভোটের পাশাপাশি নিট পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। তারপরেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। দেশজুড়ে তীব্র আন্দোলনে ফেটে পড়েন পরীক্ষার্থীরা। তারমধ্যে ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, 'সমস্ত বিষয় সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। কেবলমাত্র সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি এবং পড়ুয়াদের মানসিক বিঘ্নিত করার জন্য রাজনীতি করা হচ্ছে।'তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সাফাই বিরোধীদের থামাতে পারেনি। নিট পরীক্ষাকে ব্যাপম কেলঙ্কারির সঙ্গে তুলনা করে তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিরোধী শিবির। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেছেন, '২০১৪ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত আমি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে ছিলাম। সেই সময় নিটের প্রতি ব্যাপক সমর্থন ছিল। যদিও তামিলনাড়ু সহ কিছু রাজ্যের তরফে বলা হয়েছিল, এরফলে সিবিএসই পড়ুয়াদের সুবিধা এবং বাকিদের সমস্যা হবে। আমার মনে হয়,এই বিষয়টি নিয়ে বিশদ বিশ্লেষণ করা উচিত সিবিএসই এর। নিট পরীক্ষা বিভাজন তৈরি করেছি কিনা, তা বিচার বিশ্লেষণ করা দরকার। এরফলে, গরীব পরিবারের পড়ুয়ারা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কিনা ভাবা দরকার। নিট পরীক্ষা নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মহারাষ্ট্রও।' তিনি বলেছেন, 'ন্যাশনাল টেষ্টিং এজেন্সি নিয়েও গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। গত দশকে পেশাদারিত্ব হারিয়েছে এনসিইআরটি।' তাঁর দাবি, নতুন সংসদীয় কমিটি গঠন হলে নিট, এনটিএ এবং এনসিইআরটির বিস্তারিত পূনর্বিবেচনা এবং বিশ্লেষণ করা দরকার সবচেয়ে আগে। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের দাবি, কেন্দ্র এবং রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় থাকলে প্রশ্নপত্র ফাঁস একটি স্বাভাবিক ঘটনা। রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী এবং তৃণমূল নেতা ব্রাত্য বসু আগেই বলেছেন, শিক্ষা দুর্নীতির তদন্তে তৎপর কেন্দ্র। যদিও নিট পরীক্ষায় দুর্নীতি যেভাবে লক্ষাধিক পড়ুয়ার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে, সে বিষয়ে নীরব কেন্দ্রীয় সরকার।
  • Link to this news (আজকাল)