মাছ-সব্জির মতোই বর ফেরি করা হচ্ছে, দাম ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা! হুলস্থুল কাণ্ড পূর্ব বর্ধমানে
আনন্দবাজার | ১৬ জুন ২০২৪
পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে মাছ-সব্জি বিক্রি করে থাকেন অনেকেই। শহর, মফস্সলে তো বটেই, গ্রামেগঞ্জেও এই ছবি অতি পরিচিত। এ বার আনাজের মতো ভ্যানে করে বর ফেরি করারও দৃশ্য ধরা পড়ল পূর্ব বর্ধমানে খণ্ডঘোষে! ভ্যানে বসে থাকা বরেদের পরনে পাজামা-পাঞ্জাবি। মাথায় টোপর। রীতিমতো মাইকিং করে তাঁদের দাম হাঁকা হচ্ছে। কারও দাম ৫০০ টাকা, কারও আবার পাঁচ হাজার টাকা। তবে ফেরিওয়ালারা জানিয়ে দিচ্ছেন, ৫০০ টাকার বরে কোনও ‘গ্যারান্টি’ নেই!
এই ঘটনায় শোরগোল পড়ল খণ্ডঘোষের বোসপাড়া এলাকায়। বুড়ো শিবের গাজনকে ঘিরে প্রতি বছর সেখানে রঙ্গ-তামাশা হয়। তিন দিনের গাজনকে ঘিরে গোটা গ্রামে উন্মাদনা থাকে। এ বার গাজন উপলক্ষেই এই বর ফেরি! ফেরিওয়ালাদের সঙ্গে দরদাম করলেন গ্রামবাসীরাও। কেউ কেউ একটু ঠাট্টা করে বললেন, ‘‘এ যেন একেবারে দুয়ারে বর পরিষেবা!’’
গাজনের পুরোহিত মন্মথ ভট্টাচার্য জানান, দীর্ঘদিনের পুরানো রীতি মেনেই খণ্ডঘোষের রায়পাড়া, ভট্টাচার্যপাড়া ও বোসপাড়া মিলিয়ে তিন দিনের বুড়ো শিবের গাজন হয়ে আসছে। গাজনে এলাকার ১০০-১৫০ জন সন্ন্যাস গ্রহণের পর বুড়ো শিবের পুজোপাঠে অংশ নেন। আর বুড়ো শিবের গাজনকে ঘিরে সন্ন্যাসীরা সং সেজে বিভিন্ন চরিত্র ও কাহিনী তুলে ধরেন । সেখানে যেমন থাকে সাম্প্রতিক বিষয়, তেমনই প্রাধান্য পায় পৌরাণিক কাহিনি। সেই মতোই এ বার কয়েক জনকে বর সাজানো হয়েছে গ্রামবাসীদের আমোদের জন্য। মন্মথ বলেন, ‘‘অনেক দূর থেকে মানুষজন বুড়ো শিবের গাজনে ভিড় করেন। প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো বুড়ো শিবের গাজন। নির্বাচনের জন্য এ বার গাজনের তারিখ একটু পিছিয়ে দিতে হয়েছে।’’
খণ্ডঘোষ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ অপার্থিব ইসলাম বলেন, ‘‘এই বুড়ো শিবের গাজন মানে গোটা এলাকার মানুষজন আসবে। উৎসবে মাতবে। এটাই দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আসছে।’’ বর ফেরি নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘মানুষ উৎসবে আনন্দ পান। মজাও লাগে। বর ফেরি অন্যতম আকর্ষণ। তাই সকলে তারিয়ে তারিয়ে গাজন উপভোগ করেন।’’