নতুন দণ্ড সংহিতা আইন তৈরিতে কোনও রকম তাড়াহুড়ো করা হয়নি। অনেকের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে, অনেক ভাবনাচিন্তা করে এই নতুন আইন আনা হয়েছে বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় আইন এবং বিচারমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল।
‘ভারতীয় দণ্ডবিধি’, ‘ফৌজদারি কার্যবিধি’ এবং ‘ভারতীয় সাক্ষ্য আইন’ বাতিল হয়ে আসতে চলেছে ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ (বিএনএসএস), ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ (বিএনএস) এবং ‘ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম’ (বিএসএ) আইন। ১ জুলাই দেশ জুড়ে চালু হবে এই আইন। এই বিষয়ে অবহিত করার জন্য রবিবার কলকাতার এক হোটেলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল কেন্দ্রীয় আইন এবং বিচার মন্ত্রক। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মেঘওয়াল বলেন, ‘‘অনেকে বলছেন, তাড়াহুড়ো করে কারওর থেকে পরামর্শ না নিয়ে এই আইন আনা হয়েছে। কিন্তু এটা ঠিক নয়। দেশের প্রধান বিচারপতি, ১৬টি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি, ১৮টি রাজ্য, ৬টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, পাঁচটি আইন কলেজ, ২২টি আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে এই ব্যাপারে পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। পরামর্শ দিয়েছেন ১৪২ জন সাংসদ, ২৭০ জন বিধায়ক এবং সাধারণ মানুষও। তার পর চার বছর ধরে সেই সব পরামর্শ নিয়ে আলোচনা এবং গভীর চিন্তাভাবনার পরে এই আইন আনা হয়েছে।’’
মন্ত্রীর কথায়, ‘‘পরাধীন ভারতে মানুষকে দণ্ড দেওয়ার জন্য আইন করেছিলেন ব্রিটিশরা। নরেন্দ্র মোদী চান দেশের নাগরিকদের ন্যায় এবং সুরক্ষা দিতে। তাই এই নতুন তিনটি আইন আনা হয়েছে।’’ এর ফলে মানুষ দ্রুত, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নির্ভুল বিচার পাবেন বলে দাবি করেছেন মেঘওয়াল। অনুষ্ঠানে নয়া তিনটি আইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনম। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘১৫০ বছরের ঔপনিবেশিক শাসনে ভারতবাসীর দাবি এবং প্রয়োজনীয়তা উপেক্ষা করে ব্রিটিশরা ফৌজদারি আইন তৈরি করেছিলেন তাঁদের নিজেদের সুবিধার জন্য। স্বাধীনতার প্রায় আট দশক পরে দেশ যখন দারুণ ভাবে উন্নতির পথে এগিয়ে গিয়েছে, বিশেষ করে প্রযুক্তিগত দিক থেকে, তখন আইন এবং বিচার ব্যবস্থা পিছিয়ে থাকতে পারে না।’’
অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন কলকাতা, পটনা, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশার বিচারক, বিচারপতি, সরকারি কৌঁসুলি, আইনজীবী, আইনের ছাত্র প্রমুখরা। অনুষ্ঠানে বিদায়ী ভাষণ দেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। এর আগে এই নতুন তিন আইন নিয়ে এমন অনুষ্ঠান হয়েছে দিল্লি এবং গুয়াহাটিতে। মুম্বই এবং চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠান হওয়ার কথা।