জন্মদিনের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু
আনন্দবাজার | ১৭ জুন ২০২৪
বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে যাবেন বলে রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। বলে গিয়েছিলেন, রাতে থাকবেন বন্ধুর বাড়িতেই। ভোরে মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল ওই তরুণের। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে ই এম বাইপাসের সার্ভে পার্ক থানা এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণের মাথায় হেলমেট ছিল না।
জানা গিয়েছে, মৃতের নাম আকাশ মাখাল (১৯)। বাড়ি বৈষ্ণবঘাটা-পাটুলি টাউনশিপে। মা-বাবার একমাত্র সন্তান আকাশ মুকুন্দপুরের একটি স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়তেন। তাঁর বাবা পেশায় গাড়িচালক। পরিবার সূত্রের খবর, মাস ছয়েক আগে বাইক কিনেছিলেন আকাশ। শনিবার রাত আটটা নাগাদ তপসিয়ায় এক বন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য বেরোন। বাড়িতে বলে গিয়েছিলেন, রাতে ফিরবেন না। পরিবারের সদস্যেরা জানান, রাত ১১টা নাগাদ মায়ের সঙ্গে শেষ বার ফোনে কথা হয় আকাশের। রবিবার ভোরে থানা থেকে ফোন করে ওই তরুণের মৃত্যু সংবাদ জানানো হয় তাঁর পরিবারকে।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, রুবির দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে বাইক নিয়ে আসার সময়ে লোহার গার্ডরেলে ধাক্কা মারে আকাশের বাইক। ছিটকে পড়েন ওই তরুণ। দুমড়ে যায় বাইকটির সামনের অংশ। টহলরত পুলিশকর্মীরা দ্রুত ওই তরুণকে কাছেরই একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান। হাসপাতাল সূত্রের খবর, আকাশের মাথার পিছন দিকে আঘাত লেগেছিল। বাইকটি আটক করেছে সার্ভে পার্ক থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, সারা রাত বন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন আকাশ। সেখানে ছিলেন তাঁদের অন্য বন্ধুরাও। পার্টিতে মদ্যপানের আয়োজন ছিল। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ বাড়ি ফেরার জন্য বেরোন আকাশ। তার ঘণ্টা দেড়েক পরে, ভোর পাঁচটা নাগাদ ঘটে দুর্ঘটনা। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, ওই তরুণ মত্ত অবস্থায় ছিলেন। সেই সঙ্গে বাইকের গতিও ছিল অত্যন্ত বেশি। রবিবার আকাশের দেহের ময়না তদন্ত করা হয়। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে বেপরোয়া গতির কারণেই এই দুর্ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। চালক মত্ত অবস্থায় ছিলেন কি না, তা দেখা হচ্ছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই পুরো ঘটনাটি স্পষ্ট হবে।’’
এ দিন পাটুলিতে আকাশের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ভিড় করে আছেন প্রতিবেশী এবং আত্মীয়স্বজনেরা। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আকাশের মা-সহ পরিবারের বাকি সদস্যেরা। মা পূর্ণিমা মাখাল বললেন, ‘‘বাড়ি থেকে বেরোনোর সময়ে আমার কাছ থেকে ১০০ টাকা নিল। বলল, বন্ধুকে উপহার দেবে। রাতে আবার আমাকে ফোন করে বলল, আমি যেন খেয়ে নিই। ও ভোরে ফিরে আসবে। কিন্তু ওটাই যে ওর শেষ কথা, তা কে ভেবেছিল!’’