জলের অপচয় রুখতে আগেই মিটার বসেছিল হুগলির চুঁচুড়া আর চন্দননগরে। এ বার তারই অনুসারী হল উত্তরপাড়া পুরসভা। ইতিমধ্যে ওই এলাকার অন্তত দু’হাজার বাড়িতে মিটার বসে গিয়েছে। পর্যায়ক্রমে এই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আওতায় মিটার বসছে বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহের কাজে। জলের অপচয় কমাতে দীর্ঘদিন ধরেই সাধারণ মানুষের কাছে প্রচার চলছিল। এ বার জলে মিটার বসিয়ে মানুষকে আরও সতর্ক করা হচ্ছে।’’
উত্তরপাড়া পুরসভা সূত্রে খবর, গঙ্গার জলকে পরিশুদ্ধ করে পানীয়ের জন্য ব্যবহারের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। হুগলিতে উত্তরপাড়ার কোতরং এবং বলাগড় ব্লকে গঙ্গার জল পরিশুদ্ধ করে পানীয় জলের জন্য বিশাল প্রকল্প তৈরি করেছে রাজ্য সরকার।
রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকার মাটির নীচ থেকে পাম্পের সাহায্যে জল তুলে পুরসভাগুলির বাড়ি বাড়ি সরবরাহের কাজে আর অনুমোদন দিতে রাজি নয়। এক সময় জেলার গোঘাট এবং বলাগড়কে কেন্দ্রীয় সরকারের জল অনুসন্ধান পর্ষদ ‘ডার্ক জোন’ অর্থাৎ কালো তালিকাভুক্ত করেছিল। বলাগড়ের জলে আর্সেনিক মিলেছিল।
এমনকি কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় উত্তরপাড়া-শ্রীরামপুর, চুঁচুড়া-মগরা-সহ জেলার বেশ কিছু এলাকাকে চিহ্নিত করে ঘোষণা করা হয়েছে, কোনও অবস্থাতেই ওই সমস্ত জায়গায় মাটির নীচের জল তোলা যাবে না। ওই সব এলাকায় মাটির নীচের জলস্তর নিম্নগামী। তার উপর বড় বড় আবাসন তৈরি, পুকুর বুজিয়ে ফেলার কারণে জলস্তরের ভাঁড়ার খালি।
চুঁচুড়ার পুরপ্রধান অমিত রায় বলেন, ‘‘পুরসভার বেশ কিছু বাড়িতে জলের মিটার বসেছে। জল অপচয় বন্ধ না হলে আগামী প্রজন্মের পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে।’’ চন্দননগরের পুরপ্রধান রাম চক্রবর্তী বলেন ,‘‘এক দশক আগে সরকারি একটি প্রকল্পে চন্দননগরে বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহে মিটার বসেছিল। তবে নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে কিন্তু মিটার এখনও পুরোদমে চালু হয়নি। আমরা করব ভবিষ্যতে।’’
মিটার বসার সঙ্গেই সঙ্গেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি বিদ্যুতের মতো আগামী দিনে পুর এলাকায় জল কিনে খেতে হবে? জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের জল প্রকল্পের আওতায় বাড়ি বাড়ি শুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছনোর কাজে কোনও অর্থ নেওয়ার কথা বলা হয়নি।