• মেয়ের হাতে চকোলেট দিয়ে কাজে বেরিয়ে ফিরলেন না 'গার্ড' বাবা...
    ২৪ ঘন্টা | ১৮ জুন ২০২৪
  • প্রদ্যুৎ দাস: ছোট্ট মেয়ের হাতে চকলেট দিয়ে আর বাড়ি ফেরা হল না ট্রেনের গার্ড বাবার। ফিরছে ১৯৯৯ সালে এই পথে ঘটা গাইশাল ট্রেন দুর্ঘটনার স্মৃতি। সাত সকালে অভিশপ্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেন নিয়ে যাত্রা শুরু করে ট্রেনের গার্ড আশীষ বাবু। কিন্তু বাড়ি ফেরা হল তাঁর। শোকে পাথর পরিবার।সকালে শেষ বারের মতো ছোট্ট মেয়ের হাতে চকলেট দিয়ে কাজে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু গিয়ে বাড়ি ফেলা হল না অভিশপ্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনের গার্ড বাবার। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া শিলিগুড়ির ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে। এক মেয়ে এবং বউ এবং মাকে ছেড়ে চলে গেল না ফেরার দেশে ৩৫ বছরে এই যুবক।  

     উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা। আচমকাই পিছন থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনের পেছনে ধাক্কা মারে মালবাহি  ট্রেন। আর সেই ট্রেনের ধাক্কায়  নিজের কেবিনের মধ্যেই আটকে পরে মৃত্যু হয় ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনের গার্ড আশীষদের। আশীষ বাবুর বাড়ি  শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে। সকাল আটটা নাগাদ বাড়ি থেকে বের হয় আশীষ বাবু। মেয়েকে  চকলেট কিনে দিয়ে বলে যান রাতে বাড়ি ফিরব। প্রসঙ্গত, ট্রেন দুর্ঘটনার জেরে গুরুতর জখম হন শঙ্কর মোহন দাস। দ্রুত উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। হাসপাতালে পৌঁছতেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবার সূত্রে খবর, রবিবার সকাল ৫টা নাগাদ কাজের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। সোমবার সকালেই মৃত্যুর খবর আসে বাড়িতে। এরপরই শঙ্কর মোহন দাসের মৃতদেহ আনতে উত্তরবঙ্গের পথে রওনা দেন পরিবারের সদস্যরা। মা, স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে ভরা সংসার শঙ্কর মোহন দাসের। তাঁর মৃত্যুতে কার্যত ভেঙে পড়েছেন সকলে। ইতিমধ্যেই রেলের তরফে মৃতদের পরিবারের ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করা হয়েছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ও আহতের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন।

    নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনটির গার্ডের দায়িত্ব নিয়ে যাত্রা শুরু করেন আশীষ দে। এর কিছু সময় পরেই আশীষ বাবুর পরিবার হঠাৎ জানতে পারে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস রাঙ্গাপানি ষ্টেশনের কিছু দূরেই  দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। সকাল নটায় বাড়িতে পৌঁছয় আশীষ বাবুর মৃত্যু সংবাদ।  এমন সংবাদ শোনার পরেই আশীষ বাবুর স্ত্রী বাচ্চা সহ পরিবার কার্যত শোকে পাথর। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় ভেঙে পড়েছে গোটা শিলিগুড়ি। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায়  উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বাড়ছে মৃতদেহ স্তুপ। আহত বহু যাত্রী। এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১৫ এবং আহতের সংখ্যা ৬০ বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। সোমবার সকালে ঘটে যাওয়া এই রেল দূর্ঘটনায় ফিরেছে ১৯৯৯ সালের ২ রা আগস্ট এই রেল পথের গাইশালে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর ট্রেন দুর্ঘটনার স্মৃতি। 
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)