• স্বামীকে ফোনে জানান, 'সিট পেয়েছেন...', রাত আড়াইটেয় বিউটি ফিরল নিথর দেহে!
    ২৪ ঘন্টা | ১৮ জুন ২০২৪
  • অরূপ লাহা: সোমবার ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে গুসকরার বিউটি বেগমের। এক নিমেষে বাড়িতে আনন্দের পরিবেশ পরিণত হয়েছে বিষাদের সুরে। সোমবার ছিল ইদুজ্জোহা, আনন্দের উৎসব আর তাতেই সামিল হয়ে পরিবারের সঙ্গেই থাকতে চেয়ে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে তড়িঘড়ি ট্রেন ধরেছিলেন বিউটি। 

    তার বাড়ি ফেরার কথা ছিল হলদিবাড়ি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে। সোমবার তা বাতিল থাকায় বিউটির স্বামী বলেছিলেন মঙ্গলবার যাওয়ার কথা। কিন্তু উৎসবের দিনে নিজের পরিবারের সঙ্গেই থাকতে চেয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের জেনারেল কামরায় উঠেছিলেন তিনি। স্বামীকে ফোন করে বলেছিলেন ট্রেন ছেড়েছে, সিট পেয়েছেন। তারপরই আসে ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনার খবর। জলপাইগুড়ি থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরত্বে দু্র্ঘটনাস্থলে বেলা ১২ টার কিছু সময় পর পৌঁছন বিউটির স্বামী হাসমত শেখ ও তার সহকর্মী শেখ তারিক আনোয়ার। এরপরই তারা সেখানে বিউটির খোঁজ না পেয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে পৌঁছন। ইমার্জেন্সী ওয়ার্ডে খুঁজে না পেয়ে, বিউটির ছবি দেখে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ পরিবারকে জানায় বিউটির মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকেই ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় তার দেহ হাসপাতালের মর্গে আসে। পরে মর্গ থেকেই তার স্বামী বিউটি দেহ শনাক্ত করেন।শেখ আনোয়ার বলেন, 'সাড়া দিন ধরে দিদিকে খুঁজে বেড়িয়েছি, কিন্তু পাইনি। দুর্ঘটনাস্থল হাসপাতালে গিয়ে বার বার করে দেখার পর অবশেষে হাসপাতালে মর্গে দিদির দেহ দেখতে পাই। রেলের তরফে থেকে সাহায্য হিসেবে কিছুই পাইনি, রাজ্য পুলিস যদিও বা অল্প কিছু সাহায্য করেছে। আমরা ব্যক্তিগত গাড়িতে করেই দিদির দেহ নিয়ে আসতে চাইলে মাটি দেওয়া থানার পুলিস একটি চালান দেয়। কিন্তু রেলের পক্ষ থেকে কোনও সাহায্য বা সদর্থক ব্যবহার পাইনি।'তার আরও প্রশ্ন, রেলের এই ব্যবহারে তারা খুশি হবেন কী করে। পাড়া-প্রতিবেশীরা বলছেন, একটা জীবনের দাম মাত্র কয়েক লাখ টাকায় মেলানো যায়। এভাবে আর কতদিন যাত্রী নিরাপত্তার প্রশ্ন শিখিয়ে তুলে, দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের অংক দিয়ে হিসাব মেলাবে ভারতীয় রেল। ভোরের আজানের সঙ্গেই প্রশ্নগুলো ঘুরপাক খাচ্ছে। স্বজন হারানো কান্নায় বাতাস ভারী হচ্ছে। রেল অবশ্য আগেভাগেই মোটা টাকার ক্ষতি পূরণ ঘোষণা করে দায় সেরেছে। 
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)