তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার বছরখানেকের মধ্যেই রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হলেন মানসকুমার ঘোষ। সোমবার দলের তরফে মানসের নাম ঘোষণা হতেই পুরনো কাউকে কেন প্রার্থী করা হল না, সে প্রশ্নে দলের উত্তর দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ে শোরগোল পড়ে যায়। একাধিক নেতা দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিতে তৈরি হয়েছেন বলেও সমাজ মাধ্যমে ছড়ায়। তাতেও শুরু হয় হইচই।
পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যা দেখিয়ে দলের জেলা সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কাছে পাঠানো ইস্তফাপত্র সামাজিক মাধ্যমে ‘পোস্ট’ করেন বাসুদেব সরকার। বিজেপির যুব মোর্চার জেলা সহ-সভাপতি শুভম স্যান্যালও একই কারণে পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে সংগঠনের নেতৃত্বের কাছে পাঠানো চিঠি সামাজিক মাধ্যমে ‘পোস্ট’ করেন। বাসুদেব দিনভর ফোন ধরেননি। হোয়্যাটসঅ্যাপেও তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। শুভমের দাবি, তিনি ব্যক্তিগত কারণে পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়েছেন। বিজেপির রায়গঞ্জ শহর মণ্ডলের সহ-সভাপতি অমিত দাস বলেন, “দলের পুরনো নেতা প্রার্থী না হওয়ায় ক্ষোভ স্বাভাবিক।” বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক কমল দেবনাথ বলেন, “দলের ঘোষিত প্রার্থীকে দলের নেতা-কর্মীদের মানতেই হবে। তবে কারও সাময়িক ক্ষোভ হতেই পারে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল দাবি করেন, “রায়গঞ্জে বিজেপির প্রার্থীকে পুরনো নেতা ও কর্মীরা মানতে পারছেন না। তাঁরা অপমানিত ও বঞ্চিত বোধ করে ইস্তফা দিতে শুরু করেছেন।”
২০০৮-২০১১ সাল পর্যন্ত মানস রায়গঞ্জ ব্লক যুব কংগ্রেস ও ২০১১-২০১৭ জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৩ সালে মানস রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ হন কংগ্রেসের টিকিটে জিতে। ২০১৭ সালে তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়ে দলের জেলা সহ-সভাপতির দায়িত্ব পান। ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তিনি পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সহ-সভাপতি ছিলেন। মাঝে ২০১৯-২০২২ সাল পর্যন্ত মানস রায়গঞ্জ ব্লক তৃণমূল সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তার পরে তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদকের পদে থাকাকালীন পঞ্চায়েত ভোটের মুখে, বছরখানেক আগে, মানস বিজেপিতে যোগ দেন। এ বারের লোকসভা ভোটে তিনি রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কার্তিকচন্দ্র পালের ‘ইলেকশন এজেন্ট’ ছিলেন। মানস বলেন, “দল আমার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার উপরে আস্থা ও ভরসা রাখায় আমি কৃতজ্ঞ। আমাকে প্রার্থী করার জন্য দলে ক্ষোভ বা কারও ইস্তফা দেওয়ার বিষয়ে দলীয় ভাবে আমার কাছে খবর নেই।”