কাঠবিড়ালি শিকার করার অভিযোগে এক ব্যক্তির জেল হেফাজত হল। হলদিয়ার সুতাহাটার কাশীপুর গ্রামের ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দা সন্দীপন দাস, পরিবেশকর্মী মধুসূদন পড়ুয়া ওই ব্যক্তিকে শিকার করা কাঠবিড়ালি-সহ বন দফতরের হাতে তুলে দেন। শিকারি সরু তলতা বাঁশের সাতনলা (মাছের কাঁটার মতো দু’টি তীক্ষ্ণ ধারাল অংশ থাকে) দিয়ে ন’টি কাঠবিড়ালি শিকার করেন।
বন দফতর সূত্রে খবর, ধৃতের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতায়। ধৃতকে সোমবার হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয়। তাঁর সাত দিনের জেল হেফাজত হয়েছে। নন্দকুমার রেঞ্জের রেঞ্জার অতুলপ্রসাদ দে বলেন, ‘‘শিকার বন্ধে লাগাতার প্রচার চালানো হয়েছে। রেলের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন স্টেশনে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এর পরেও শিকারের ঘটনা ঘটছে। আরও সচতনতা বাড়ানো দরকার।’’
পূর্ব মেদিনীপুর বন দফতর সূত্রে খবর, শিকার পরব, ফলহারিণী কালীপুজোর সময় ব্যাপক প্রচার চালানো হয়েছিল বন দফতরের উদ্যোগে। এর পরেও গ্রামের ভিতর চোরাগোপ্তা পাখি, কাঠবিড়ালি, বেজি, ভাম শিকারের অভিযোগ আসছিল। হলদিয়ার নদী তীরবর্তী গ্রামীণ এলাকায় এই শিকার চলছিল।
কী ভাবে শিকার করা হয়? সূত্রের খবর, বকুল বীজের বাঁশি দিয়ে কাঠবিড়ালির স্বর নকল করে ডাকা হয়। সেই ডাক শুনে কাঠবিড়ালি এলেই ফলায় বিদ্ধ করে শিকার করা হয়। শিকারে ক্ষুব্ধ পরিবেশ বিজ্ঞানী তথা কাঠবিড়ালি বিশেষজ্ঞ অসীমকুমার মান্না। তিনি বলেন, ‘‘নিন্দনীয় কাজ। একটা কাঠবিড়ালি থেকে ৫০ গ্রাম মাংসও পাওয়া যায় না। তবুও এই প্রবৃত্তি মানা যায় না।’’ তাঁর আশঙ্কা, শিকার করা কাঠবিড়ালি শুধু খাওয়া নয় অন্য কাজেও লাগানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘মৃত কাঠবিড়ালির মাথার খুলি রেখে শরীরের ভিতরের অংশ বার করে নেওয়া হয়। সেখানে খড় ঢুকিয়ে রাসায়নিক দিয়ে পটু হাতেই সেলাই করা হয়। এই জাতীয় মৃত কাঠবিড়ালি চড়া দামে বিক্রি হয়।’’
শিকার বন্ধে বন দফতরের সঙ্গে নিয়মিত প্রচার কাজ করেন মধুসূদন পড়ুয়া। মধুসূদন বলেন, ‘‘শিকার উৎসবের সময় নজরদারি চলে। তাই সেই সময় শিকার বন্ধ করা গেলেও প্রচার ও নজরদারি ঢিলে হতেই শুরু হয় শিকার। শুধু কাঠবিড়ালি নয়, পাখি, ভাম, বেজিও শিকার করছেন এঁরা। দলবদ্ধ ভাবে ঘুরলে নজরে পড়তে পারেন তাই একা চলছে শিকার। বন্ধ হচ্ছে কই।’’