এ বার ভোটে জেলার দুই লোকসভা কেন্দ্রেই বিপুল ব্যবধানে হারে হজম করতে হয়েছে বিজেপি-কে। ভোট মিটতেও দলের নেতৃত্বের বিড়ম্বনার শেষ নেই। ভোটে দলের কর্মীদের পাওনা টাকা না-দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ তুলে দলের বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডলের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপির কিছু কর্মী। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সন্ন্যাসীচরণ।
রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বোলপুর স্টেশন রোডের কাছে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে পরেই গত মাসে দলের একাংশ কর্মী বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে অভিযোগ তোলেন, বুথের কর্মী ও ভোটের খরচের টাকা দেননি জেলা নেতৃত্ব। ৪ জুন ভোট গণনার আগে এজেন্ট ও দলীয় কর্মীদের নিয়ে জেলা নেতাদের বৈঠকেও খরচের টাকা না-দেওয়ার অভিযোগে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন বিজেপি কর্মীরা। ওই দিন জেলা সভাপতি এবং বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী পিয়া সাহার সঙ্গে অভিযোগকারী কর্মীদের বচসা প্রকাশ্যে আসে।
ফের একই অভিযোগে কর্মী-বিক্ষোভের মুখে পড়লেন সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ। রবিবার রাতে বোলপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় থাকা দলের বোলপুর নগর মণ্ডল সভাপতি লক্ষ্মণ তিওয়ারির দোকানে বিজেপি কর্মীরা জড়ো হয়ে ভোটের খরচ সংক্রান্ত দাবি নিয়ে মণ্ডল সভাপতিকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সেই সময় নিজের গাড়ি নিয়ে ওই রাস্তা দিয়েই সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল। তাঁকে
দেখতে পেয়ে কর্মীরা তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কর্মীদের রোষের মুখ থেকে বাঁচতে কোনওক্রমে সেখান থেকে গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যান জেলা সভাপতি বলে সূত্রের খবর।
বিক্ষোভকারী বিজেপি কর্মী ধর্মেন্দ্র রজক বলেন, “যাঁরা নিচুস্তরে দল করেন, তাঁদের প্রাপ্য টাকা কিছু নেতা মেরে খাচ্ছেন। পোলিং এজেন্ট থেকে শুরু করে বুথ সভাপতি, কেউই বুথের খরচের টাকা পাননি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘জেলা সভাপতি এবং মণ্ডল সভাপতি আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছেন সেই টাকা। সেই হিসাব চাওয়ার জন্যই জেলা সভাপতির গাড়ি আটকানো হয়েছিল। কিন্তু, তিনি কোনও উত্তর না-দিয়েই গাড়ি ঘুরিয়ে পালিয়ে যান। আমরা চাই যে সমস্ত নেতা কর্মীদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন, তাঁদের অবিলম্বে দল থেকে সাসপেন্ড করা হোক।”
জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ বলেন, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। কিছু জন দলের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে এই সমস্ত কাজ করে চলেছে। যা আখেরে দলের পক্ষেই ক্ষতিকারক হচ্ছে।” রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের কটাক্ষ, “ আগেই বলেছিলাম নির্বাচন পেরোলেই ওদের গোষ্ঠী কোন্দল আরও মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। যা ঘটছে, এগুলি সেই কোন্দলেরই বহিঃপ্রকাশ।’’