ভোটে লড়ে ঝালদা শহরের ১২টি ওয়ার্ডে ১০০টি ভোটও পেল না ফরওয়ার্ড ব্লক। অতীতে শহরের কয়েকটি ওয়ার্ডে মজবুত ভিত থাকা এই দলের কেন এমন বিপর্যয়, তা নিয়ে চর্চা চলছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে। ফব-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অসীম সিংহ বলেন, ‘‘কেন এমন হল তা নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করব।’’
তবে ফব-র ঝালদা শহর কমিটির অন্যতম নেতা মুকেশ দাসের স্বীকারোক্তি, ‘‘এটা দলের সাংগঠনিক বিপর্যয়। পাশাপাশি বরাবরের মতো এ বারও বামফ্রন্টের বড় শরিক সিপিএমকে আমরা পাশে পাইনি। আমাদের ভোটও বিজেপির দিকে গিয়েছে। তবে অচিরেই হারানো জমি পুনরুদ্ধার হবে বলে আশাকরি।’’
লোকসভা ভোটের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, সারা শহরে ফরওয়ার্ড ব্লক ভোট পেয়েছে মাত্র ৯৪টি। ২ নম্বর এবং ১২নম্বর ওয়ার্ড ছাড়া বাকি ওয়ার্ডগুলিতে তারা ১০টি করে ভোটও পায়নি। এমনকি সাত নম্বর ওয়ার্ডের একটি বুথে তারা শূন্য পেয়েছে।
রাজনৈতিক মহল সূত্রে খবর, ঝালদা শহরের ১২টি ওয়ার্ডের মধ্যে বামফ্রন্টগত ভাবে ফরওয়ার্ড ব্লক বরাবর পাঁচটি ওয়ার্ডে সিংহ চিহ্নে লড়াই করে আসছে। ২০০০ সালের পুরসভা নির্বাচনে ওই পাঁচটির মধ্যে চারটি আসনে জয়ী হন ফব-র প্রার্থীরা। আততায়ীদের গুলিতে নিহত কংগ্রেস পুরপ্রতিনিধি তপন কান্দুও একসময়ে ফব-র প্রতীকে জিতেই পুরপ্রতিনিধি হয়েছিলেন। ২০০৫ সালের পুরবোর্ডে ফব থেকে জিতেই কিছু দিনের জন্য তিনি পুরপ্রধানের দায়িত্বও পেয়েছিলেন। তাঁর সহধর্মিনী বর্তমানে কংগ্রেস পুরপ্রতিনিধি পূর্ণিমা কান্দু একবার ফব-র টিকিটে দাঁড়িয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তাঁর জায়ের কাছে কিছু ভোটে হেরে যান।
কিন্তু বরাবর দাপট থাকা এই শহরে কেন ফব-র এ বার এমন ভরাডুবি? পুরুলিয়া কেন্দ্রের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী ধীরেন্দ্রনাথ মাহাতোর ব্যাখ্যা, ‘‘তৃণমূলকে হারাতে গিয়ে অনেকেই বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন।’’
তবে বামফ্রন্টের জোটে না থাকাও যে প্রভাব ফেলেছে, সে কথাও অকপটে মেনে নিয়েছেন বর্ষীয়ান ওই নেতা।