বাড়ছে ইভিএম বিতর্ক। ফল প্রকাশের দু’সপ্তাহ পরে ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব বিরোধীরা। ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন টেসলা কর্তা ইলন মাস্কও। আজ ইভিএমে কারচুপি সম্ভব বলে মুখ খুললেন কংগ্রেসের ওভারসিজের শাখার প্রাক্তন চেয়ারম্যান স্যাম পিত্রোদাও।
অন্য দিকে, বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নকভির বক্তব্য, এত দিন দেশের লোকেরা ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলত, এখন কিছু বিদেশি ‘কনট্র্যাক্ট কিলার’ সরব হয়েছেন।’’ মাস্কের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নকভি ওই মন্তব্য করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
গত শনিবার মুম্বই উত্তর-পশ্চিম কেন্দ্রের প্রার্থী শিবসেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী)-র অমোল গজানন কীর্তিকর বলেন, ইভিএমে কারচুপির জন্য তিনি ৪৮ ভোটে হেরে গিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, জয়ী প্রার্থী শিন্দে গোষ্ঠীর রবীন্দ্র ওয়াইকরের শ্যালক মঙ্গেশ পান্ডিলকর গণনাকেন্দ্রে উপস্থিত দীনেশ গুরভ নামে এক নির্বাচনী আধিকারিকের মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিলেন। ওই ফোনে যে ওটিপি আসে তার মাধ্যমে ইভিএম খুলতে পেরেছিলেন মঙ্গেশ। যার ফলে ভোটের ফলাফলে কারচুপি করেন তিনি। অমোলের অভিযোগের ভিত্তিতে মহারাষ্ট্র পুলিশ মঙ্গেশ ও দীনেশ গুরভকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
এর পরেই ইভিএমে কারচুপির সম্ভাবনা নিয়ে মুখ খোলেন মাস্ক। সরব হন রাহুল গান্ধী, অখিলেশ যাদবের মতো বিরোধী নেতারা। আজ রাহুল এক্সে লেখেন, ‘যখন সাংবিধানিক সংস্থাগুলি কব্জা করে নেওয়া হয়, তখন জনতার জন্য সুরক্ষার উপায় নিহিত থাকে স্বচ্ছ নির্বাচন প্রক্রিয়াতেই। বর্তমানে ইভিএম হল ব্ল্যাক বক্স। নির্বাচন কমিশনের উচিত ইভিএম ও সামগ্রিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।’ আর পিত্রোদা বলেন, ‘‘প্রায় ৬০ বছর ইলেকট্রনিক্স, টেলিকম, তথ্যপ্রযুক্তি ও সফ্টওয়্যারের জটিল বিষয় নিয়ে কাজ করেছি। ইভিএমের সামগ্রিক পরিচালন ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে মনে হয়েছে, ইভিএমে কারচুপি সম্ভব। শ্রেষ্ঠ ব্যবস্থা হল ব্যালট পেপার।’’
মাস্কের পরেই কংগ্রেস নেতাদের ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তোলার পিছনে ভারতকে বদনাম করার কৌশল রয়েছে বলে সরব বিজেপির তরুণ চুঘ। তাঁর কথায়, ‘‘রাহুল বিদেশি শক্তির হয়ে খেলছেন। যাদের কাজ হল ভারতের গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তি নষ্ট করা।’’ মাস্ক সমস্ত ইলেক্ট্রনিক ব্যবস্থা হ্যাক করা যায় বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, তার প্রেক্ষিতে প্রাক্তন ইলেক্ট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর বলেন, ‘‘মাস্কের কথা মেনে নিলে ধরতে হবে তাঁর টেসলা গাড়িরও হ্যাকিং সম্ভব।’’ নির্বাচন কমিশন অবশ্য দাবি করেছে, ইভিএমে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন ব্যবস্থা থাকে না। তাই ইভিএম খোলার জন্য মোবাইল ফোনে আসা ওটিপির প্রয়োজন হয় না। ইভিএমকে ‘রি-প্রোগ্রাম’ করাই যায় না বলে
দাবি কমিশনের।