• পুড়ে ছাই হয়ে গেল জলদাপাড়ার হলং বনবাংলো, বিধ্বংসী আগুনে সব শেষ
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১৯ জুন ২০২৪
  • জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের মধ্যে থাকা হলং বনবাংলো পুড়ে ছাই। বিধ্বংসী আগুনে সব শেষ। ডুয়ার্সের বন বাংলো বলতে একেবারে প্রথমে যে নামটা আসত সেই হলং বনবাংলোতে বিধ্বংসী আগুন। ১৫ জুন থেকে জঙ্গল বন্ধ থাকার জেরে বাংলোতে কোনও পর্যটক ছিলেন না। সেক্ষেত্রে পর্যটকদের মধ্য়ে কারোর ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে হলং বনবাংলো পুড়ে যাওয়ার ঘটনা কার্যত নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা উত্তরবঙ্গকে। 

    প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে সর্ট সার্কিট থেকে এই বাংলাতে আগুন ধরে যায়। কয়েকজন কর্মচারী এই বাংলোর দেখাশোনার জন্য় ছিলেন। তাঁরাই প্রথমে আগুনের ফুলকি দেখতে পান। কিন্তু কিছু করে ওঠার আগে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে কাঠের বাংলো। সূত্রের খবর, বাংলোর একটা এসিতেও বিস্ফোরণ ঘটে। যার জেরে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। 

    রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ আগুন লাগে। এরপর আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করে প্রায় গোটা বাংলোকে। এই ঐতিহ্যবাহী বাংলোর অগ্নিকাণ্ডকে ঘিরে ইতিমধ্য়েই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন মাদারিহাট থেকে যায়। কিন্তু ততক্ষণে দাউ দাউ করে জ্বলে গিয়েছে গোটা বাংলো। যে বাংলো ছিল পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু, যে বাংলোর সামনে থেকে দেখা যেত বাইসনরা ঘুরছে, যে বাংলোতে বহু বিশিষ্টজনেরা এসে রাত কাটিয়েছেন সেই বাংলো কার্যত শেষ হয়ে গেল। 

    ওয়েস্ট বেঙ্গল টুরিজ্যম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন এই বাংলোটির পরিচালনা করতেন বলে জানা গিয়েছে। ডুয়ার্সে বেড়াতে গিয়ে হলং-য়ে রাত্রিবাস করার ইচ্ছা থাকে অনেকেরই। তবে বেশিরভাগ সময়ই দেখা যেত এখানে ভিআইপিরা রয়েছেন। তবে সাধারণ পর্যটকদের জন্য়ো এখানে থাকার ব্যবস্থা ছিল। জঙ্গলের মধ্যে অত্যন্ত সুন্দর লোকেশনে এই বাংলো। এই বাংলাতে থাকলে বোঝা যেত জঙ্গলের থাকার কি রোমাঞ্চ। রাতে হাতির পাল সামনে এলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কিছু দূরে ঘুরে বে়ড়ায় বাইসনের দল। এক অদ্ভূত সুন্দর অনুভূতি। কিন্তু সেই বাংলোই পুড়ে ছাই। কীভাবে আগুন লাগল তা তদন্ত করে দেখবে বনদফতর। কিন্তু কাদের গাফিলতিতে এত বড় অগ্নিকাণ্ড হল হলং বনবাংলোতে। মন খারাপ বহু পর্যটকের। উত্তরবঙ্গের বহু মানুষের কাছে গর্বের ছিল এই বাংলো। দেশ বিদেশের পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় ছিল এই বাংলো। সাফারির সময়তেও গাড়িগুলিকে এই হলং বনবাংলোর সামনে আনা হত। কিন্তু আগুনে সব শেষ হয়ে গেল।

    ১৯৬৭ সালে তৈরি এই বাংলো। রাজ্য বন দফতরের অন্যতম মূল্যবান বাংলো ছিল এই হলং বাংলো। বলা চলে এটা ছিল ডুয়ার্সের অন্যতম সম্পদ। মুখ্য়মন্ত্রী থাকার সময় জ্যোতি বসু মাঝেমধ্যেই আসতেন এই বাংলোতে। এর আগে ২০১০ সালে আগুন লেগেছিল জয়ন্তী বনবাংলোতে। এবার হলংয়ের আটটি ঘর একেবারে পুড়ে ছাই হয়ে গেল।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)