• কুসংস্কার দূর করতে ছুটে গেলেন মহকুমা শাসক
    আজকাল | ২০ জুন ২০২৪
  • মিল্টন সেন,হুগলি: শিকল বেঁধে রাখা হয়েছে কিশোরকে। খবর পেয়ে এদিন ব্যাণ্ডেলের কেওটা হেমন্ত বসু কলোনিতে গেলেন মহকুমা শাসক। ভূতে ধরেছে, এই সন্দেহে শিকল দিয়ে তালা মেরে রাখা হয়েছে বছর ষোলোর এক কিশোরকে। ব্যান্ডেল কেওটার হেমন্ত বসু কলোনী এলাকার এমন অমানবিক ঘটনায় সাড়া পরেছিল শহরে। বুধবার জেলা সদর মহকুমা শাসক স্মিতা সান্যাল শুক্লা ওই কিশোরের বাড়িতে যান। ছিলেন, স্থানীয় কাউন্সিলর অনিন্দিতা মন্ডল এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা। সম্প্রতি হেমন্ত বসু কলোনি এলাকায় এক কিশোর অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। হাত পা ছুঁড়তে থাকে, গালিগালাজ করতে থাকে। কাউকে দেখলেই মারধর করতে উদ্যত হয়। ঘটনার সূত্রপাত দিন পনেরো আগে, সন্ধেয় প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পরই হঠাৎ করেই তার এই আচরণ দেখে ভুতে ধরেছে সন্দেহ হয় পরিবারের। বাধ্য হয়ে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। বর্ধমানের ওঝার থেকে জল পড়া এনে খাওয়ানো হয়। মাদুলি পরিয়েও কোনও কাজ হয় না। এরপর চিকিৎসকের দারস্ত হয় পরিবার। ওষুধ খেয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে কিশোর।অখুলে দেওয়া হয় শিকল। এই সময়ে দাঁড়িয়েও মানুষের এহেন কুসংস্কার অবাক করেছে প্রতিবেশীদের। এই আধুনিক সমাজে এখনও ভূত প্রেতের কথা উঠছে! এদিন মহকুমা শাসক বলেছেন, এখনও কিছু মানুষের মধ্যে কুসংস্কার রয়েছে। কিশোরের বাবা কুসংস্কার আচ্ছন্ন। তাই সময় এবং অর্থ দুটোই ব্যয় হয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলর বা প্রশাসনের লোকজনকে আগে জানালে হয়তো আরও আগে কিশোরের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেত। এখন নিউরো সাইক্রিয়াটিস্টকে দেখানো হচ্ছে। কিশোর বর্তমানে সুস্থ। দশম শ্রেণীর ছাত্র ভালোভাবে পড়াশোনা করুক এটাই তিনি চান। কুসংস্কার দুর করতে এদিন বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে সচেতন করা হয় এলাকাবাসীদের। বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য সন্দীপ সিংহ বলেন, তিনি জানতে পেরে কিশোরের বাড়িতে এসে বোঝান, ওঝা-ঝাড়ফুঁক এসবের ফলে অনেক সময় মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। তেমন ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য সচেতন থাকতে হবে। কিশোরের বাবা কার্তিক মালাকার বলেছেন, সবাই তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। ছেলে এখন আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ।।ছবি পার্থ রাহা।
  • Link to this news (আজকাল)