• জলদাপাড়ার হলং বাংলোতে আগুন লাগার ঘটনার নেপথ্যে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব!
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২০ জুন ২০২৪
  • অর্ণব সাহা ও অরূপ দাস, মাদারিহাট:  আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে ঐতিহ্যের হলং বন বাংলো। কীভাবে আগুন লাগল? এই নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। গত ১৬ জুন থেকে আগামী তিনমাসের জন্য বন্ধ রয়েছে বাংলো। তারপরে কীভাবে আগুন লাগল, তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। এদিকে অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ জানতে বুধবার তদন্ত কমিটি গড়ার কথা জানিয়েছেন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। 

    বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে বীরবাহা বলেন, "১৫ তারিখ থেকে বন্ধ রয়েছে বাংলো। কীভাবে আগুন লাগল, তা তদন্তের পরই বলতে পারব। বিনা তদন্তে বলতে পারব না। কমিটি গঠন করা হচ্ছে। কমিটির মাধ্যমে তদন্ত হবে। কমিটির তদন্তের পরই সঠিক তথ্য বলতে পারব।? একইসঙ্গে মন্ত্রী এ-ও বলেন, ?প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন।"

    বিরোধীদের নিশানা করে বীরবাহা আরও বলেছেন, "রেলের দুর্ঘটনা থেকে নজর ঘোরাতে রাজনীতি করছেন। বিরোধীরা রাজনীতি করার জন্য নানারকম রাজনীতি করবেন।" সোমবারই শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
    আলিপুরদুয়ারের সাংসদ ও মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা বলেন, "এই রাজ্যের শাসকদল যে কোনও দুর্ঘটনাকেই ম্যানমেড আখ্যা দেয়। এটাই আশ্চর্যের। হলং বাংলোতে আগুন লাগার ঘটনায় প্রকৃত তদন্ত হোক।"

    মঙ্গলবার রাতে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের হলং বনবাংলোতে ভয়াবহ আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে বাংলো।হতাহতের কোনও খবর নেই। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ হলং বাংলোতে আগুন লাগে। বাংলোটি বন্ধ ছিল। শর্টসার্কিট থেকে আগুন বলে প্রাথমিক অনুমান। এসি ফেটে আগুন ছড়ায় বলে জানিয়েছেন বাংলোর কর্মীরা। বাংলোয় থাকা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। কিন্তু আয়ত্তে আনা সম্ভব হয়নি। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় দমকল। রাত ১০টা ১০ মিনিট নাগাদ সেখানে পৌঁছয় দমকলের গাড়ি। অগ্নিকাণ্ডের সময় বাংলোতে কোনও পর্যটক ছিলেন না।

    এই অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে বন দফতরের সচিব বিবেক কুমার বলেন, "বাংলোর গ্রাউন্ড ফ্লোরে ইলেক্ট্রিক বক্স থেকে শর্ট সার্কিট হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। প্রথমে কর্মীরাই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু, এরই মধ্যে এসিতে আগুন ধরে যায়। যে গ্যাস এসিতে থাকে সেখান থেকে সম্ভবত বিস্ফোরণ হয়েছে। আর এর জেরেই হলং বাংলোটির অধিকাংশ অংশ পুড়ে গিয়েছে।" বাংলোটি যেহেতু কাঠের তৈরি, সেই কারণে আগুন অত্যন্ত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে তাঁর মত।

    পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এই বাংলো। ১৯৬৭ সালে মাদারিহাটে জলদাপাড়া জঙ্গলের মধ্যে এই বাংলোটি তৈরি হয়। দেশ বিদেশের বহু পর্যটকদের কাছে অন্যতম ডেস্টিনেশন ছিল হলং বাংলো। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুও অত্যন্ত পছন্দ করতেন এই জায়গাটিকে। সেখানে অনেক সময় ছুটি কাটাতে সপরিবারে গিয়েছেন তিনি। বাংলোটি পুড়ে যাওয়ায় মন খারাপ পর্যটকদের।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)