টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: খুব কম ব্যবধানে চব্বিশের লোকসভা ভোটে প্রাক্তন স্ত্রীকে হারিয়ে বিষ্ণুপুর থেকে জিতেছেন সৌমিত্র খাঁ। জিতেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা শোনা গিয়েছিল বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদের গলায়। এবার প্রকাশ্য রাস্তায় স্থানীয় এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার পা ছুঁয়ে প্রণাম করতে দেখা গেল তাঁকে। সৌমিত্র খাঁ-র একের পর এক এই আচরণ কি বিশেষ ইঙ্গিতবাহী? পা ছুঁয়ে প্রণাম করার পর রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে নতুন করে জল্পনা। সৌমিত্রর দাবি, এটা নিছক সৌজন্য। তবে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্যও উসকে দিয়েছে নয়া জল্পনা।
সৌমিত্র খাঁ (Soumitra Khan) সাম্প্রতিক বঙ্গ রাজনীতির এক বিতর্কিত চরিত্র। ২০১১ সালে কংগ্রেসের টিকিটে কোতুলপুর বিধানসভা থেকে জয়লাভ করে বিধায়ক (MLA) হন। দুবছর যেতে না যেতেই ২০১৩ সালে যোগ দেন তৃণমূলে। বিধায়ক হিসাবে মেয়াদ শেষের আগেই ২০১৪ সালে তৃণমূলের (TMC) টিকিটে জিতে বিষ্ণুপুরের সাংসদ হন তিনি। সেবারও মেয়াদ শেষের আগেই দলবদল করেন তিনি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে দলবদল করে বিজেপির (BJP)প্রার্থী হন তিনি। ২০১৯ এ বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য বিষ্ণুপুরের সাংসদ হন সৌমিত্র খাঁ।
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনেও (Lok Sabha Election 2024) নিজের প্রাক্তন স্ত্রী তথা তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলের বিরুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে তৃতীয়বারের জন্য বিষ্ণুপুরের (Bishnupur)সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। নির্বাচনে জয়লাভের পরই তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ডের গালভরা প্রশংসা শোনা গিয়েছিল সৌমিত্র খাঁ-র গলায়। নিজের দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও মুখ খুলতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। একের পর এক সৌমিত্রর বিস্ফোরক সেই মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে সৌমিত্র ফের শিবির বদলের জল্পনা শুরু হয়। সেই জল্পনাকে সোমবার আরও উসকে অক্সিজেন জোগাল তৃণমূল নেতাকে প্রকাশ্যে তাঁর প্রণাম করার দৃশ্য।
সোমবার রতনপুরে সাংসদ উন্নয়ন তহবিল সংক্রান্ত কাজে গিয়েছিলেন সৌমিত্র খাঁ। ফেরার সময় রাস্তায় তাঁর সঙ্গে দেখা হয় তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যস্তরের নেতা, বর্তমানে এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা হিসাবে পরিচিত ভবতারণ চক্রবর্তীকে দেখতে পেয়েই প্রকাশ্যে তাঁর পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন সৌমিত্র। করেন কুশল বিনিময়ও। আর এতেই সৌমিত্রর দলবদল নিয়ে তৈরি হওয়া জল্পনা নতুন করে অক্সিজেন পেয়েছে। যদিও সৌমিত্র খাঁ নিজে এই ঘটনাকে নিছকই সৌজন্য বলে দাবি করেছেন। তৃণমূল নেতা ভবতারণ চক্রবর্তীও বিষয়টিকে একইভাবে ব্যাখ্যা করেন। তবে সৌমিত্রর দলবদলের জল্পনা কিন্তু জিইয়ে রয়েছেই। কারণ, পরে সৌমিত্রর মুখে শোনা গিয়েছে, দরকারে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করতে পারেন।