দিন কয়েক ধরেই জ্বরে কাবু ছিল ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হলেও জ্বর মোটেই সারছিল না। তাই তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবার। চিকিৎসকদের পরামর্শে মঙ্গলবার কোভিড পরীক্ষা হয় ছাত্রের। পরীক্ষার আগের দিন, বৃহস্পতিবার জয় জানতে পারে সে কোভিডে আক্রান্ত। এই অবস্থায় পরীক্ষায় বসাটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল তার। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ এই খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সকলের তৎপরতায় মহিষাদল বাসুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে পরীক্ষা দিতে পারল জয়। তার জন্য হাসপাতালে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছিল। হাসপাতালের ভিতর পরীক্ষাস্থলের কাছে জারি হয় ১৪৪ ধারা। বেলা ৯টার আগেই মহিষাদল থানার পুলিশকর্মীরা হাসপাতালে পৌঁছে যান। সময় মতো প্রশ্নপত্র নিয়ে হাজির হন পর্ষদের কর্মীরা। শেষ পর্যন্ত ভাল ভাবেই প্রথম দিনের পরীক্ষা দিতে পেরেছে জয়। মহিষাদল ব্লক হাসপাতালের বেডে বসে বাংলা পরীক্ষা দেওয়ার পর ওই পরীক্ষার্থী বলে, ‘‘কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট হাতে পেয়ে ভেঙে পড়েছিলাম। পরীক্ষা দিতে পারব কি না, জানা ছিল না। শেষ মুহূর্তে প্রশাসনের সহযোগিতায় পরীক্ষা দিতে পারলাম।’’
জয়ের পরিবার প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। ছাত্রের মা টুম্পা চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ছেলের কোভিড ধরা পড়ায় আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। তবে ওর জন্য হাসপাতালে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন, স্কুল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগও প্রশংসনীয়। সবার কাছে আমরা ঋণী।’’
এই ঘটনা প্রসঙ্গে মহিষাদলের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শাহরুখ আজাদ জানান, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর কোভিড পজিটিভ জানতে পেরে ‘স্পেশ্যাল রুম’-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ওই ছাত্র প্রথম দিন ভাল ভাবেই পরীক্ষা দিয়েছে।’’
এ বছর মাধ্যমিক দিচ্ছে ন’লক্ষ ২৩ হাজার ১৩ জন। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে এ বার ২০ জন পরীক্ষার্থী শারীরিক অসুস্থতার জন্য হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা দিয়েছে। এক জন পরীক্ষা দিয়েছে ল্যাপটপ নিয়ে। শারীরিক অসুবিধার কারণেই ওই পরীক্ষার্থীকে ল্যাপটপ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়।