• হ্যাটট্রিক! রাহুলের হাতে ছানাবড়ার হাঁড়ি তুলে দিয়ে কেঁদে ফেললেন সেই অরুণ, ধন্যবাদ জানালেন অধীরকে
    আনন্দবাজার | ২০ জুন ২০২৪
  • অবশেষে হ্যাটট্রিক! দীর্ঘ টালবাহানার পর প্রশাসনিক জটিলতা কাটিয়ে দেরিতে হলেও ‘রাহুলজি’র সঙ্গে দেখা হল বহরমপুরের অরুণ দাসের। ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ মুর্শিদাবাদ ছেড়ে বীরভূমের দিকে যাওয়ার সময় রাহুল গান্ধীর হাতে ছানাবড়ার হাঁড়ি তুলে দিলেন মিষ্টির দোকানদার। বৃহস্পতিবার যে কাজ তিনি পারেননি, শুক্রবার সেই কাজ সফল করতে পেরে অরুণের মুখে যুদ্ধজয়ের হাসি। বললেন, ‘‘আসলে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়েছিলাম। স্নান সেরে চলে এসেছিলাম গোকর্ণে।’’

    গত দু’বার বহরমপুরে এসে দু’বারই টেক্সটাইল কলেজ মোড়ে অরুণের দোকানে ‘স্পেশ্যাল ছানাবড়া’ খেয়ে গিয়েছেন রাহুল। এ বারও কংগ্রেস নেতা তাঁর দোকানে আসবেন বলে আশাবাদী ছিলেন অরুণ। আগেভাগে সাত কেজির স্পেশ্যাল ছানাবড়া বানাতে বসে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এ বার ঠাসা কর্মসূচি এবং নিরাপত্তার কড়াকড়িতে অরুণের দোকানে যাওয়া হয়নি রাহুলের। বৃহস্পতিবার সকালেই বহরমপুরে রাহুলের রোড শোয়ের সময় ফুলে ফুলে মিষ্টির দোকান সাজিয়েছিলেন অরুণ। ধুয়েমুছে সাফসুতরো করে অপেক্ষায় বসে ছিলেন। দুপুরে বাড়িতে খেতে পর্যন্ত যাননি। ঘড়িতে তখন সন্ধ্যা ৭টা পেরিয়েছে। তাঁর দোকানের সামনে দিয়েই রাহুলের হুড খোলা লাল গাড়ি বেরিয়ে গেল। দাঁড়ালেন না? এ বার কি রাহুলজি আসবেন না? ভাবতে ভাবতে মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল অরুণের। পর মুহূর্তেই মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে দৌড়েছেন রাহুলের হাতে তুলে দেবেন বলে। কিন্তু নাহ্! নিরাপত্তার বেষ্টনী ঠেলে তাঁর প্রিয় নেতার কাছে পৌঁছতেই পারেননি যুবক। তবু হাল ছাড়েননি। কংগ্রেসের এক প্রাক্তন বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে নিয়ে রাহুলের রাত্রিবাসের জায়গায় পৌঁছে যান অরুণ।

    আবার ব্যর্থ। তবে এ বারও দমে যাননি ওই মিষ্টি দোকানের মালিক। ধনুকভাঙা পণ করে শুক্রবার রাহুলের কনভয় আসার পথে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। হাতে সাত কেজি ছানাবড়ার হাঁড়ি। রাহুলের পাশে ছিলেন বহরমপুরের সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী। রাস্তায় দাঁড়ানো অরুণকে দেখে হাত নেড়ে ইশারা করলেন। রাহুলকে জানালেন ওই সেই যুবক, যাঁর দোকানে বসে দু’বার তৃপ্তি করে ছানাবড়া খেয়েছিলেন তিনি। অরুণের দিকে হাত নাড়লেন রাহুল। একগাল হেসে হাত নাড়তে নাড়তে এগিয়ে গেলেন অরুণ। নিজের হাতে তৈরি ছানাবড়া পৌঁছে দিয়ে ‘হ্যাটট্রিক’ সেরে হেসে ফেললেন বহরমপুরের মিষ্টির কারবারি। তাঁর কথায়, ‘‘গত কাল মিষ্টি পৌঁছে দিতে পারিনি বলে অনেক কটাক্ষ ভেসে এসেছে। কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল অধীরদা থাকলে মিষ্টি ঠিক রাহুলজির কাছে পৌঁছবে। পৌষ সংক্রান্তিতে দাদা কথা দিয়েছিলেন চেষ্টা করবেন। দাদা কথা দিয়ে কথা রাখেন।’’ বলতে বলতে কেঁদে ফেললেন অরুণ।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)