২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনের দিন বাংলায় ‘সংহতি যাত্রা’ করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার কলকাতার সেই মিছিলে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। জেলায় জেলায় এই ‘সংহতি যাত্রা’ করেছে তৃণমূল। বাদ যায়নি গত কয়েক দিন ধরে আলোচনায় উঠে আসা সন্দেশখালিও। সেখানকার তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কলকাতা বাসন্তী হাইওয়ে সরবেড়িয়া মাছের আড়ত থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার তাঁদের মিছিল হয়েছে। কয়েক হাজার তৃণমূল নেতা-কর্মী এবং সমর্থক পা মেলান তাতে। সেখানে শাহজাহানের নামেও স্লোগান ওঠে। বিধায়ক সুকুমার বলেন, ‘‘সন্দেশখালির জননেতা শেখ শাহজাহান। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আজ (সোমবার) আমরা সংহতি মিছিল করছি। আদালতের উপর আমাদের পূর্ণ ভরসা আছে। আইন আইনের পথে হাটবে।’’ এর পর শাহাজাহনকে নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘সংগঠন তো তিনিই করেছেন। ব্লক সভাপতি তিনিই। অঞ্চল সভাপতি তাঁর নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে। এখানে সম্প্রীতি ভাঙার চেষ্টা করছে বিজেপি। আমরা সংগঠিত দল। আমরা সংগঠিত ভাবেই চলব।’’ এর পর শাহজাহানের কণ্ঠে ভাইরাল হওয়া অডিয়ো ক্লিপ প্রসঙ্গে ফেরেন বিধায়ক সুকুমার। তিনি বলেন, ‘‘এর আগে আপনারা শুনেছেন একটি অডিয়ো ক্লিপ। তাতে তিনি (শাহজাহান) আমাদের সংগঠিত হতে বলেছেন। ভয় না পেতে বলেছেন।’’
গত ৫ জানুয়ারি রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলার তদন্তে সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়িতে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন ইডির পাঁচ আধিকারিক। তিন জন মার খান। কার্যত প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়ে যেতে হয় তাঁদের। পরে তিন জনকে ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে। ল্যাপটপ, মোবাইল থেকে নগদ টাকা খুইয়ে ফেরা ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আবার এফআইআরও হয় ন্যাজাট থানায়। পাল্টা ইডিও একটি এফআইআর দায়ের করেছে। এখন মামলা চলছে কলকাতা হাই কোর্টে। আদালত নির্দেশ দিয়েছিল সিবিআই এবং রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্ত করবে। কিন্তু সোমবারই তাতে আপত্তি জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেছে ইডি। তারা চাইছে , তদন্ত করুক কেবল সিবিআই। অন্য দিকে, ১৭ দিন পরেও শাহজাহানের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। তৃণমূল বিধায়কের অবশ্য ইঙ্গিত, শাহজাহান ঠিকই আছেন। তাঁর কথা মতোই সন্দেশখালিতে সংগঠন চলছে। তিনি বলেন, ‘‘আদালত সিট গঠন করতে বলেছে। এখন ইডির যদি কোনওটাই পছন্দ না হয়, মহামান্য হাই কোর্টের সিদ্ধান্তকে যদি মান্যতা না দেয়, তা হলে আর কিছু বলার থাকে না। হাই কোর্ট ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কেন্দ্র এবং রাজ্য যৌথ তদন্তকারী দল তৈরি করতে বলা হয়েছিল। আমরা খুশি হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, হাই কোর্ট যখন মনিটরিং করছে, ভাল কিছুই তদন্ত হবে।’’ পর ক্ষণেই শাহজাহান প্রসঙ্গ থেকে বিধায়ক চলে গিয়েছেন ‘সংহতি’ প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রীতির বাংলায় আমরা রবীন্দ্রনাথ, নজরুলকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাংলার সম্প্রীতিকে রক্ষা করার চেষ্টা করছি। ২০২১ সালে করেছি। ২০২৪ সালেও করব। কোনও সাম্প্রদায়িক দল এখানে প্রতিষ্ঠা পাবে না।’’