ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণের জন্য বুধবার সিপিএমের রাজ্য কমিটি বৈঠক বসেছিল। সেই বৈঠক থেকে বেরিয়ে সিপিএমের হুগলি গ্রামাঞ্চলের এক নেতা ও হাওড়া শহরাঞ্চলের আর এক নেতাকে নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বলতে শোনা গেল, ‘‘প্রশ্নটা কিন্তু সাহস করে তোলা হয়েছে!’’ কী প্রশ্ন? সিপিএম সূত্রে খবর, রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম কেন ভোটে লড়লেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বর্ধমানের কৃষক সভার নেতা অমল হালদার সেই প্রশ্ন তুলেছেন। সেলিমের ভোটে দাঁড়ানোর সমালোচনাও করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, সেলিমই প্রথম রাজ্য সম্পাদক, যিনি লোকসভা ভোটে দাঁড়ালেন। এর আগে সূর্যকান্ত মিশ্র রাজ্য সম্পাদক পদে থাকাকালীন ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে লড়েছিলেন। দু’জনের কেউই জিততে পারেননি।
যদিও সেলিমের ভোটে দাঁড়ানো নিয়ে প্রশ্নের কোনও যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, সেলিম যদি ভোটে না লড়তেন, তা হলে সংগঠনকে লড়াইয়ের ময়দানে নামানোই যেত না। কলকাতা-সহ একাধিক জেলা কমিটির পক্ষ থেকে রাজ্য কমিটিকে বলা হয়েছে, ২০১৬-২০২৪ সালের মধ্যে দলের রাজনৈতিক বিপর্যয় হয়েছে! তার মূল কারণ, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট। রাজ্য কমিটির অনেক সদস্য মনে করছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট আসলে উপরের কমিটির চাপিয়ে দেওয়া। নিচুতলায় এই জোটকে কেউ মেনে নিচ্ছেন না। ভোটে তার ফলই ভুগতে হচ্ছে দলকে। এই মতে বিশ্বাসী এক নেতার কথায়, ‘‘রাজ্য কমিটির ভোট-কৌশলে আমাদের রাজনৈতিক অধঃপতন হয়েছে।’’
পাল্টা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘‘আসলে বাস্তব পরিস্থিতি যা, আর ভোটের আগে রাজ্য কমিটিতে যা রিপোর্ট এসেছে, তার মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক। আসলে নিচুতলায় কমিটি বাঁচানোর জন্য মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছিল। এখন সব ধরা পড়ে যাওয়ায় সকলে নিজেদের মতো করে যুক্তি সাজাচ্ছেন।’’