সূত্রের খবর, সম্প্রতি বেনিয়াপুকুরের সেন্ট্রাল ডিটেক্টিভ ট্রেনিং স্কুলে ওই কর্মসূচি হয়। অংশ নিয়েছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন আদালতের শতাধিক আইনজীবী। এ ছাড়াও অনলাইনে এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন ভিন্ রাজ্যের সরকারি আইনজীবীরাও। তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি থেকে শুরু করে আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। এক সরকারি আইনজীবী জানান, ইতিমধ্যে বিভিন্ন নিম্ন আদালতের সরকারি আইনজীবীদেরও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, প্রশিক্ষণে নতুন আইনের সঙ্গে পুরনো আইনের ফারাকের দিকগুলি তুলে ধরা হয়। সেই সঙ্গে অপরাধের পরে তদন্তে নেমে কী ভাবে কোনও কিছু বাজেয়াপ্ত করবেন পুলিশ আধিকারিকেরা, আলোচনা হয় তা নিয়েও। প্রসঙ্গত, নতুন আইনে কোনও কিছু বাজেয়াপ্ত করতে হলে গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিয়ো রেকর্ডিং করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া, নতুন আইনে অনলাইনে মামলা দায়ের করার সংস্থানও রয়েছে।
ওই প্রশিক্ষণ শিবিরে অংশ নেওয়া, আলিপুর আদালতের মুখ্য সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল জানান, চলতি আইন অনুযায়ী কেউ প্রতারণায় অভিযুক্ত হলে তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় মামলা রুজু করা হয়। কিন্তু নতুন ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ চালু হয়ে গেলে প্রতারণার মামলা দায়ের করা হবে ৩১৮ ধারায়। এর পাশাপাশি, বদলে যাচ্ছে খুনের ঘটনায় মামলার ধারাও। বর্তমানে খুনের অভিযোগের ক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মামলা রুজু হয়। নতুন আইনে তা রুজু হবে ১০৩ ধারায়। অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর ক্ষেত্রে মামলার ধারা ৩০৪এ থেকে বদলে হবে ১০৬। এ ছাড়া, খুনের মামলা-সহ দশ বছরের সাজা রয়েছে, এমন ধারায় মামলা হলে অভিযুক্তকে ৬০ দিনের মধ্যে যে কোনও ১৫ দিন পুলিশ নিজেদের হেফাজতে রাখতে পারবে।
গত ডিসেম্বরে নতুন দণ্ড সংহিতা সংক্রান্ত তিনটি বিল পাশ হয়েছিল সংসদে। আইন হিসাবে ওই তিনটি বিল কার্যকর হবে আগামী ১ জুলাই। তারই সঙ্গে বাতিল হয়ে যাবে ১৮৬০ সালে তৈরি ভারতীয় দণ্ডবিধি (ইন্ডিয়ান পেনাল কোড), ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি (ক্রিমিনাল প্রসিডিয়োর কোড) এবং ১৮৭২ সালের ভারতীয় সাক্ষ্য আইন (ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট)। এই তিন আইনের জায়গা নেবে যথাক্রমে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’, ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ এবং ‘ভারতীয় সাক্ষ্য বিল’।