পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলকারটিতে ফুলঝোড়ের একটি কনভেন্ট স্কুলের মোট ৯ জন ছাত্রী ছিল। সেটি যাচ্ছিল কাঁকসার বামুনাড়ার ‘তপোবন’ আবাসনে। পথে আচমকা দুর্ঘটনায় পড়ে সেটি। গাড়িটির সামনের কাচ ভেঙে যায়। এক ছাত্রীর মাথায় চোট লাগে। অল্পবিস্তর জখম হয় আরও দু’জন। গাড়ির সিটে ছিটেফোঁটা রক্ত পড়ে থাকতে দেখা যায়। কান্নাকাটি শুরু করে দেয় পড়ুয়ারা। দৌড়ে আসেন আশপাশের লোকজন। পুলিশ পৌঁছয়। পড়ুয়াদের বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। কিছু ক্ষণের মধ্যে অভিভাবকেরা আসেন। জখম দুই ছাত্রীকে পাঠানো হয় বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
এক অভিভাবক ভোলানাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “দুর্ঘটনার খবর পেয়ে অফিস থেকে দৌড়ে আসি। তবে মেয়ের চোট তেমন গুরুতর নয়। দুশ্চিন্তার কিছু নেই।” তাঁর স্ত্রী ভারতী বলেন, “পুলকারের উপরে ভরসা করা ছাড়া উপায় নেই। আশা করব ভবিষ্যতে এমন আর হবে না।” পুলকারের পিছনেই মোটরবাইকে যাচ্ছিলেন হাপিজ আনোয়ার। তিনি জানান, তাঁকে ‘ওভারটেক’ করে পুলকারটি এগিয়ে যায়। তাঁর সামনেই দুর্ঘটনা ঘটে। তাঁর দাবি, ‘‘দ্রুত গতিতে ছুটছিল গাড়িটি। আচমকা মোষ চলে আসায় গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি চালক।’’ যদিও গাড়ির চালক বৈদ্যনাথ ভান্ডারির দাবি, ঘণ্টায় ৪০-৪৫ কিলোমিটার বেগে যাচ্ছিলেন। আচমকা পাশের জঙ্গল থেকে দৌড়ে দু’টি মোষ রাস্তায় চলে আসে। তিনি ব্রেক কষলেও, একটি মোষের সঙ্গে ধাক্কা এড়াতে পারেননি। গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। গাড়িটি রাস্তার পাশে নেমে যায়।
দুর্ঘটনার সময়ে তিনি আবাসন থেকে বেরোচ্ছিলেন জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা শিবশঙ্কর গোস্বামী বলেন, “চালকের কোনও দোষ ছিল বলে মনে হয় না। খুব বেশি গতি ছিল না গাড়ির। আচমকা মোষ চলে আসায় বিপত্তি ঘটে। তাও রাস্তার অন্য পাশে নিয়ে গিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছিলেন চালক। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।” তাঁর অভিযোগ, রাস্তার মাঝে হঠাৎ গবাদি পশু চলে আসায় শহরে বার বার দুর্ঘটনা ঘটছে। গবাদি পশুর মালিকদের সচেতন হওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, “এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে যে কেউ যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনায় পড়তে পারেন।”
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, খাটাল মালিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে একাধিক বার বৈঠক হয়েছে। আগের তুলনায় সচেতনতা তৈরি হয়েছে। তবে ফের তেমন উদ্যোগ হবে।