অভিযোগ, সরকারি ওষুধ ছাড়া অনেক ওষুধই বাইরে থেকে কিনে আনতে বলছেন চিকিৎসকেরা। রাতে তা হলেই সমস্যা। দিনের পর দিন এ ভাবে চললেও সমস্যার সমাধানে কোনও ব্যবস্থা হচ্ছে না। হাসপাতালের ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের কর্মী জয়ন্ত সর্দার বলেন, “মাঝেমধ্যে এমন কিছু ওষুধ ডাক্তারবাবুরা লিখে দেন যেগুলি সচরাচর চলে না। তাই সেগুলি থাকে না।”
বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের ক্যানিং জ়োনের সভাপতি রোহিতাশ্ব মণ্ডল বলেন, “আগে হাসপাতালের সামনের ওষুধের দোকান রাতে খোলা থাকত। কিন্তু বেশ কয়েক বছর আগে ন্যায্য মূল্যের দোকান চালু হওয়ায় সারারাত জেগে থেকেও ব্যবসা না হওয়ায় একে একে বাইরের সব দোকানই বন্ধ হয়ে যায়। তবে, যদি কোনও নির্দেশ আসে, তবে আমরা আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।”
গত বৃহস্পতিবার রাতে একের পর এক রোগীর পরিজনেরা ওষুধ না পেয়ে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানের সামনে বিক্ষোভ দেখান। ক্যানিংয়ের মিঠাখালির বাসিন্দা জাকির শেখ নিজের ভাইঝিকে নিয়ে সে দিন রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ওই হাসপাতালে এসেছিলেন। শ্বাসকষ্ট-সহ নানা সমস্যা ছিল রোগীর। চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসার পর তিনটি ওষুধ লিখে দেন। সরকারি জোগান না থাকায় তিনটি ওষুধই বাইরে থেকে কিনে আনতে বলা হয়। কিন্তু ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে একটিও ওষুধ মেলেনি। শুধু হাসপাতাল চত্বর নয়, সারা ক্যানিং বাজার ঘুরেও রাতে একটি ওষুধের দোকানও খোলা পাননি জাকির।
ওষুধ না পেয়ে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হতে শুরু করে। শেষে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে বারুইপুরে গিয়ে ওষুধ জোগাড় করতে হয় জাকিরদের। জাকির বলেন, “হাসপাতালে থাকা ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে অর্ধেকের বেশি ওষুধই পাওয়া যায় না। আর বাইরে থাকা ওষুধের দোকান রাতে খোলা থাকে না। ওষুধ না পেয়ে রোগী ও তাঁদের পরিবারকে চরম হয়রানির শিকার হতে হয়।”
জাকিরের মতোই ওই রাতে ট্যাংরাখালি থেকে নিজের তিন বছরের শিশুসন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন সন্দীপ মণ্ডল। তাঁকেও যা ওষুধ লিখে দেওয়া হয়েছিল, তা ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে মেলেনি বলে অভিযোগ। তাঁদেরকেও চরম হয়রানির শিকার হতে হয় ওষুধ জোগাড় করতে। সন্দীপ জানান, প্রায়ই রাতে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে রোগীদের এই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।