সোমবার কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পরে, উত্তরবঙ্গে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে কোচবিহারে পৌঁছে মঙ্গলবার চকচকার বড়গিলায় বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ, গ্রেটার নেতা নগেন্দ্র রায় তথা অনন্তের বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে দু’জনের মধ্যে কিছু ক্ষণ আলোচনা হয়।
তা নিয়ে বিজেপি যে ‘ক্ষুব্ধ’ তা পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছে। ওই রাতেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অনন্তের ছবি সমাজমাধ্যমে ‘পোস্ট’ করে কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে লিখেছেন— ‘‘ঘরের মধ্যে বিভীষণ ছিল আমরা জানতে পারি নাই।’’ তা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। অনেকেই সেখানে ‘কমেন্ট’ করেন। ওই প্রসঙ্গে নিখিল বলেন, ‘‘যিনি বিভীষণের মতো কাজ করবেন, তাঁকে তো অন্য কিছু বলা যায় না।"
তবে বিজেপি যে তোপ দেগেই চুপচাপ রয়েছে তা নয়। দল সূত্রেই জানা গিয়েছে, বিজেপি-শাসিত অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মাও অনন্তকে বার্তা দিয়েছেন। দু’জনের মধ্যে শীঘ্রই দেখাও হতে পারে। অনন্ত অবশ্য বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কিছু জানি না। তবে অসমের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যদি দেখা হয়, তা হলে তো সৌভাগ্যের বিষয়।’’
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, ‘‘বিজেপির সঙ্গে থাকলে সুশাসন, না থাকলে বিভীষণ বলাই ওদের সংস্কৃতি। অনন্ত রায়কে বিভীষণ বলে নিশানা করা কোচবিহারের বাসিন্দাদের বড় অংশকেও অসম্মান করার সমতুল্য।’’
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অনন্ত মহারাজের সাক্ষাৎ নিয়ে খুব একটা খুশি নন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের একটি শিবিরের নেতা বংশীবদন বর্মণও, যিনি বরাবর তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছেন। বংশীবদন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে কোনও লোকের বাড়িতে যেতে পারেন। কিন্তু তৃণমূল যদি ভেবে থাকে অনন্ত মহারাজের ভোটে তারা জিতেছে, তা ভুল। আমরা তৃণমূলের হয়ে প্রাণ দিয়ে লড়াই করেছি। তা সবাই জানে। সে জন্যেই তৃণমূল জিতেছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কোচবিহারে এসে আমাদের নিয়ে কথা বলেননি। তা নিয়ে আক্ষেপ রয়েছে। তবে মদনমোহন মন্দিরে মুখ্যমন্ত্রী পুজো দিয়েছেন। এর বিচার মদনমোহন করবেন।’’
তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, সব পক্ষকে নিয়েই চলতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী।