উত্তর সিকিমের মঙ্গনের জেলাশাসক হেমকুমার ছেত্রী বলেন, ‘‘সুরক্ষিত ভাবে সব পর্যটকদের উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন দফতর, সংগঠন, সাধারণ মানুষ, সেনা ও প্রশাসনের সম্মিলিত প্রয়াসে উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে।’’
সিকিম প্রশাসন সূত্রের খবর, উদ্ধার কাজের প্রথম দিন ৬৪ জন, দ্বিতীয় দিন ১,২২৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছিল। লাচুং এবং চুংথাং এলাকায় মূলত পর্যটকেরা আটকে ছিলেন। গুরুদুয়ারে এদের অনেকেই গত ১২/১৩ জুন থেকে আটকে ছিলেন। রাস্তা বন্ধ, সেতু ভেঙে পড়ে, নতুন করে বৃষ্টি-ধস, পাথর পড়ে ভাল রাস্তা বন্ধের মত ঘটনা ঘটতেই থাকে। মঙ্গন, সিংতাম-সহ উত্তর সিকিম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এ দিনও মঙ্গন থেকে গ্যাংটক, চুংথাং, লাচেন, ডিকচুর মতো বহু এলাকায় রাস্তা বন্ধ হয়েছে। বেশ কয়েকটি এলাকায় পরে রাস্তা খুলেছে। টানা বৃষ্টি চলতে থাকায় পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে।
সিকিম লাগোয়া কালিম্পং জেলায়ও বৃষ্টি চলছে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের ভালুখোলা এবং লিকুভিরের পরিস্থিতি ভাল নয়। সকাল থেকে দু’টি এলাকাতে পাহাড় থেকে পাথর পড়েই চলেছে। তিস্তাবাজার এলাকার দার্জিলিংগামী রাস্তা আবার তিস্তার জলে অনেকটাই প্লাবিত হয়েছে। গত দু’দিন এলাকায় পূর্ত দফতর রাস্তা, গার্ডওয়ালের কাজ শুরু করেছে। তবে জল রাস্তা অবধি চলে আসায় অনেকটাই সমস্যা বেড়েছে। এ দিন বিকাল থেকে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে নিয়ন্ত্রণ করে গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে। বড় এবং ভারী গাড়ি সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা অবধি চলবে। ছোট গাড়ি সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা অবধি চলবে। কালিম্পঙের জেলাশাসক বালা সুব্রমনিয়ন টি বলেন, ‘‘ভালুখোলা, গায়েরিখোলা, রবিঝোরা এবং লিকুভিরে সিঙ্গল লেনে সব গাড়ি চলবে।’’
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশ থেকে সিকিম পর্যন্ত উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত একটি নতুন নিম্নচাপ অক্ষরেখা সক্রিয় রয়েছে। তা ছাড়া, বুধবার থেকেই বাংলাদেশ এবং সংলগ্ন উত্তরবঙ্গের উপরে তৈরি হয়েছে আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত। এর প্রভাবে আগামী চার-পাঁচ দিন পাহাড় এবং সংলগ্ন পাদদেশের পাঁচ জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দু-তিন দিন পরে, গৌড়বঙ্গেও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়বে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের ভারপ্রাপ্ত অধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘ঘূর্ণাবর্ত এবং নিম্নচাপ বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তরবঙ্গে প্রচুর জলীয় বাষ্প টেনে আনছে বলেই এই পরিস্থিতি।’’