কোচবিহার শহরে রাজবাড়ির সামনে কেশব রোড থেকে শুরু করে একাধিক রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। কোচবিহার-দিনহাটা সড়কের হরিণচওড়ায় এক হাঁটু জল জমে রয়েছে। জল বেড়েছে তোর্সা নদীতেও। তুফানগঞ্জেও কালজানি-সহ একাধিক নদীতে জল বেড়েছে। অসংরক্ষিত এলাকায় বেশ কিছু বাড়িতে জল ঢুকেছে। রায়ডাক ১ নদীতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে হলুদ সঙ্কেত জারি করা হয়। মাথাভাঙা শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সুটুঙ্গা নদীর বাঁধের রাস্তায় মাটি ধসে বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দিনহাটা শহরের মোদকপাড়া, স্টেশনপাড়া, ঝুড়িপাড়া ছাড়াও বিভিন্ন ওয়ার্ডের বেশ কিছু জায়গা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
কোচবিহার পুরসভার পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘জমা জল বার করে দিতে কাজ শুরু করা হয়েছে। এ ছাড়া, নদীর দিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ মহকুমাশাসক (তুফানগঞ্জ) বাপ্পা গোস্বামী কালজানি নদী সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শনে যান। তিনি বলেন, ‘‘কিছু বাড়িতে জল ঢুকলেও ফ্লাড সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি হয়নি। আমরা সমস্ত দিকে লক্ষ্য রাখছি।’’ মাথাভাঙা পুরসভার পুরপ্রধান লক্ষপতি প্রামাণিক এবং দিনহাটা পুরসভার পুরপ্রধান গৌরীশঙ্কর মাহেশ্বরী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
বুধবারও জলমগ্ন হল আলিপুরদুয়ার শহরের একাধিক নিচু এলাকা। সেচ দফতর সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৮টা পর্যন্ত গত চব্বিশ ঘণ্টায় আলিপুরদুয়ারে প্রায় ১৪৩ মিলিমিটার ও হাসিমারায় প্রায় ১৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। প্রবল বৃষ্টির জেরে, বেলার দিক থেকেই শহর সংলগ্ন কালজানি নদীর জল বাড়তে শুরু করে। তবে বিকেলের পর থেকে নদীর জল কমতে শুরু করেছে বলে সেচ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে। আলিপুরদুয়ার পুরসভার পুরপ্রধান প্রসেনজিৎ কর বলেন, “শহরের কোথাও এ দিন জল জমেনি।”
ফালাকাটায় উমাচরণপুর নিম্ন বুনিয়াদী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উমাচরণপুর জুনিয়ার হাই স্কুল, একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মাঠে জল জমে যায়। অভিযোগ জানিয়েও কোন সুরাহা না হওয়ায় পথ অবরোধে নামে স্কুলপড়ুয়ারা। ফালাকাটা-মাদারি রাজ্য সড়কের নয় মাইল এলাকায় অবরোধ করা হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে অবরোধ তুলে দেয় ফালাকাটা থানার পুলিশ।
বানারহাট ব্লকের সাকোয়াঝোরা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের আংরাভাসা থেকে তেলিপাড়াগামী প্রধানমন্ত্রী সড়কের উপর বাংকুবাজারের কাছে, চাচার বিলের উপরে নির্মাণ হচ্ছে পাকা সেতু। যোগাযোগ সচল রাখতে নির্মীয়মাণ সেতুর পাশে তৈরি করা হয়েছিল ‘ডাইভার্শন’। জলের স্রোতে ভেসে যায় সে ‘ডাইভার্শন’। বর্তমানে সেখানে বাঁশের সাঁকো নির্মাণের কাজ চলছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান-সহ অন্য জনপ্রতিনিধিরা।