'আইফোন চাই', এই বায়নাজুড়ে 'কচি খোকা' উঠে পড়েছিলেন কোলাঘাটের স্টেশনের অদূরে ৩ নম্বর ওভার ব্রিজের উপরে। তাঁকে নামাতে একসময় 'প্রাণপাত' করতে দেখা যায় স্থানীয় বাসিন্দাদের। ট্রেন পরিষেবার উপর প্রভাব পড়ে। কিন্তু, তাতে কী! যুবকের তো চাই একখান আইফোন! মঙ্গলবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাটের স্টেশনের অদূরে ৩ নম্বর ওভার ব্রিজের উপরে উঠে যান এক যুবক। প্রথমে তাঁকে দেখতে পান স্থানীয়রাই। তাঁরাই ওই যুবককে নামানোর জন্য উদ্যোগ নেন।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ এবং রেল পুলিশ। রীতিমতো ভিড় জমে যায় এই দৃশ্য দেখে। পুলিশকর্মীরা ওই যুবককে নেমে আসতে বলে। সেই সময়ই তাঁর তরফে আসে 'আজব আবদার'। ওই যুবক জানান, তিনি আইফোন না পেলে কিছুতেই পা মাটিতে ছোঁয়াবেন না। বিপদের গন্ধ পান পুলিশকর্মীরাও। ওই যুবককে টোপ দিতে নীচ থেকে একটি ফোন দেখান পুলিশকর্মীরা৷ কিছুটা নেমে এসে ওই যুবক বুঝতে পারেন ওই ফোনটি আইফোন নয়। এরপর ফের সেতুস্তম্ভে চড়ে বসেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ওই যুবককে নামাতে সেতুর মাথায় ওঠেন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা। গামছা, দড়ি দিয়ে বেঁধে যুবককে নামানোর চেষ্টা করা হয়। তখনই বাঁধে বিপত্তি। দড়ি ছিঁড়ে সোজা নীচে নদীর জলে গিয়ে পড়েন ওই যুবক। সঙ্গে সঙ্গেই অবশ্য স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা নদীর জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে যুবককে উদ্ধার করেন। আহত অবস্থায় তাঁকে কোলাঘাট প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, ওই যুবক নেশাগ্রস্ত ছিলেন। খড়গপুরগামী ট্রেনের চেন টেনে কোলাঘাটে নেমে এই কাণ্ড বাঁধিয়েছিলেন তিনি। এরপর ব্রিজের মাথায় উঠে 'লম্বঝম্প' শুরু করেন।
ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে যেভাবে কোনটা আইফোন আর কোনটা নয়, তা নিয়ে তাঁর 'টনটনে জ্ঞান' দেখা যায় তাতে তাঁকে মানসিক ভারসাম্যহীন হিসেবে মানতে নারাজ উদ্ধারকাজে হাত লাগানো স্থানীয়রা। নাজির মোল্লা নামক এক ব্যক্তি বলেন, 'ও কী ভাবে উপরে উঠল জানি না। আবার বাংলা ভাষা বোঝে না বলে মনে হচ্ছে। তেলুগুতে কথা বলছে বলেই তো মনে হয়। ওর জন্য বহু মানুষকে হয়রানি পোহাতে হচ্ছে। ওই যুবক বর্তমানে তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর পরিবারের খোঁজ জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।