প্রসঙ্গত, দুর্ঘটনার দিন সকাল ৫.৫০টা থেকে ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেম কাজ করছিল না। ট্রেন চলাচল করছিল পেপার লাইন ক্লিয়ারেন্স অনুযায়ী। সকাল ৮টা বেজে ২৭ মিনিটে রাঙাপানি স্টেশনে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে TA 912 ফর্ম দেওয়া হয়। এই TA 912 ফর্ম-ই হচ্ছে পেপার ক্লিয়ারেন্স। রাঙাপানি স্টেশনে পেপার ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ায় ছত্তরহাট ও রানিপাত্র স্টেশনের মাঝে। এর ১৫ মিনিটের মাথায় ৮টা ৪২-এ দাঁড়িয়ে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনে ধাক্কা মারে মালগাড়ি। প্রশ্ন উঠছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে থাকায় লাইন ব্লক ছিল। সেখানে মালগাড়ি একই লাইনে এগোল কীভাবে? কে ওই লাইনে এগনোর জন্য় মালগাড়ি চালককে ক্লিয়ারেন্স দিল? নিয়ম অনুযায়ী, পরবর্তী স্টেশনের ক্লিয়ারেন্স ছাড়া TA 912 ফর্ম দেওয়া হয় না। পাশাপাশি, অটোমেটিক সিগন্যালিং সিস্টেম যদি কাজ না করে, তাহলে সব সিগন্যাল লাল হয়ে যায়। একে বলা হয় 'ফেল সেফ' সিস্টেম। মালগাড়ির চালক সেই লাল সিগন্যাল লক্ষ্য না করে এগোলেন কীভাবে? মোট ৪টি লাল সিগন্যাল লঙ্ঘন করেছিলেন মালগাড়ির চালক। এখন সকালবেলায় দিনের আলোয় দৃশ্যমানতার কোনও সমস্যা ছিল না। তাহলে কী করে এতগুলো লাল সিগন্যাল মালগাড়ির চালকের চোখ এড়াল? মালগাড়ির চালকের কি চোখ লেগে গিয়েছিল? 'ওভার ডিউটি'র অভিযোগ সামনে আসার পর যা অনেকটাই বাস্তব বলে মনে করা হচ্ছে।
সোমবার সকালে দাঁড়িয়ে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে ধাক্কা মারে মালগাড়ি। যার জেরে দুর্ঘটনা ঘটে। বেলাইন হয়ে যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের ২টি পার্সেল ভ্য়ান ও গার্ড কোচ সহ ৩টি কামরা। দুর্ঘটনার জেরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১। আহত কমপক্ষে ৪৫ জন। দুর্ঘটনার পর পরই মালগাড়ির চালক ও সহকারী চালককে 'মৃত' বলে ঘোষণা করে রেল। যদিও মালগাড়ির সহকারী চালক বেঁচে আছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। চোখে মুখে তাঁর সেদিন আতঙ্ক। দুর্ঘটনার জেরে ট্রমায় রয়েছেন তিনি। এখন মালগাড়ির 'জীবিত' সহকারী চালককেই তড়িঘড়ি 'মৃত' ঘোষণায়, স্বাভাবিকভাবেই রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।