গোবিন্দ রায়: বংশরক্ষার তাগিদে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত স্ত্রীকে পরপুরুষের জন্য শারীরিক সম্পর্কে জোর করার অভিযোগ। স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে যান মহিলা। তবে তা সত্ত্বেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পুলিশের তরফে কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি বলে অভিযোগ। কেন হেফাজতে নেওয়া হল না অভিযুক্তকে, প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট।
বছর চব্বিশ আগে শুরু হয় সংসার। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত দম্পতির দুটি কন্যাসন্তান হয়। পরে দুজনেরই থ্যালাসেমিয়ায় মৃত্যু হয়। অভিযোগ, ২০১৯ সাল থেকে স্ত্রীর উপরে অত্যাচার শুরু করে স্বামী। বংশরক্ষার তাগিদে সন্তান পেতে স্ত্রীকে এক যুবকের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ। আপত্তির পরেও বেশ কিছুদিন ওই যুবকের অত্যাচার সহ্য করেন মহিলা। স্থানীয় থানার দ্বারস্থ হন। অভিযোগ, তা সত্ত্বেও গত ১ এপ্রিল ফের ওই যুবক তার ঘরে ঢোকার চেষ্টা করে। তিনি বাধা দেন। তাকে মারধর করে ওই যুবক। তিনি বারুইপুর থানায় গিয়ে মৌখিকভাবে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ এফআইআর নেয়নি বলে অভিযোগ। পরে ৮ মে লিখিত অভিযোগ করেন মহিলা। তবে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বাধ্য হলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন।
এদিন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “লিখিত অভিযোগ দরকার কেন? তিনি মুখে বলেছেন সেটা এফআইআর করেছেন? কিন্তু FIR পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন! পুলিশ একটা পক্ষ নিয়েছে। ধর্ষণের অভিযুক্তকে কী করে থানা ছেড়ে দেয়? আপনারা কোনও নিরাপত্তা দেননি মহিলাকে। আপনারা অভিযুক্তকে নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। মহিলার স্বামীর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ? কেন তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়নি?” রাজ্য়ের তরফে জানানো হয়, “সেদিন লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় পুলিশ FIR করেনি। অভিযুক্তের স্ত্রীর আশ্বাসে তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাকে রেসকিউ করে আনা হয় ১২ জুন। অভিযুক্তকে ১৮ জুন গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” বিচারপতির নির্দেশ, ১২ থেকে ১৩ জুনের রাতের বারুইপুর থানার সিসিটিভি ও এসপি অফিসের ওই একদিনের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে। ওই মহিলার কোনো ক্ষতি যাতে না হয় তা-ও নিশ্চিত করতে হবে পুলিশকে। সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আগামী ৩০ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি।