এই সময়, নয়াদিল্লি ও কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুরের দুর্গ হাতছাড়া হওয়ার পর বাংলায় অধীর চৌধুরীর নেতৃত্ব নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের নেতাদের মনোভাবের আঁচ মিলতে পারে আজ, শুক্রবার। বিধানভবনে আজই এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক গুলাম মির, সম্পাদক বিপি সিংহ, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর উপস্থিতিতে লোকসভা ভোটের ফলাফলের পর্যালোচনা বৈঠক হওয়ার কথা। এই বৈঠকে কংগ্রেসের সমস্ত লোকসভা প্রার্থী, সহ সভাপতি, রাজ্য সম্পাদক, জেলা সভাপতি, শাখা সংগঠনের নেতৃত্বকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। যদিও এআইসিসি-র কয়েকজন বঙ্গজ সদস্য এই বৈঠকে ডাক পাননি বলে কংগ্রেসের একাংশের বক্তব্য। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস রাজ্যে শূন্য হয়েছে, কিন্তু অধীর নিজেই এবার হেরে যাওয়ায় মুর্শিদাবাদ, মালদার কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরাও বড় ধাক্কা খেয়েছেন। অধীর নিজে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির পদ ছাড়তে চেয়েছেন।যদিও কংগ্রেস হাইকম্যান্ড এনিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। এই পরিস্থিতিতে অধীরের নেতৃত্ব নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের কী মনোভাব, তা এই বৈঠকে স্পষ্ট হয়ে যাবে। একই সঙ্গে গুলাম মিরের বক্তব্য থেকে বোঝা যাবে, কংগ্রেস হাইকম্যান্ড এই মুহূর্তে প্রদেশ নেতৃত্বকে নিয়ে কী ভাবছে। রাজ্যের চারটি বিধানসভার উপনির্বাচনেও সিপিএম-কংগ্রেসের মধ্যে আসন সমঝোতা হয়েছে। সিপিএম-কংগ্রেসের এই সমঝোতা দলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা আর চাইছেন কি না, এই বিষয়টিও পরিষ্কার হতে পারে আজকের বৈঠকে। এআইসিসি-র সদস্য রাজ্যের এক প্রবীণ নেতার কথায়, 'প্রদেশ কংগ্রেসের কিছু নেতা অধীরকে সভাপতি পদে রাখার পক্ষে হয়তো সওয়াল করবেন। তবে গুলাম মিরের বক্তব্য থেকে বোঝা যাবে, হাইকম্যান্ড সভাপতি বদলের পথে হাঁটতে চাইছে কি না।
দিল্লিতে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বোঝা গিয়েছে অধীর আগের গুরুত্ব হারিয়েছেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গেরাই।' মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড়, তেলঙ্গানা, ওডিশা, কর্নাটক, দিল্লি, উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল খতিয়ে দেখতে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করেছে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড৷ দলের প্রবীণ ও নবীন নেতাদের সমন্বয়ে এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটিগুলি গঠন করা হয়েছে৷ যদিও পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে এমন বিশেষ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করা হয়নি। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, জাতীয় রাজনীতির সমীকরণে তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার লক্ষ্যেই আপাতত বাংলা নিয়ে 'ধীরে চলো' নীতিতে এগোচ্ছে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড৷ যদিও কংগ্রেসেরই একাংশের বক্তব্য, হাইকম্যান্ডের কাছে পশ্চিমবঙ্গ বহুদিনই মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড়, কর্নাটক, উত্তরাখণ্ডের মতো গুরুত্ব পায় না। তাই এবারের লোকসভা নির্বাচনে রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীরা পশ্চিমবঙ্গে একবারের জন্যও প্রচারে আসেননি। এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক ও সম্পাদকের হাতেই পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনের ময়নাতদন্তের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছে এআইসিসি। গুলাম মির এবং বিপি সিংহ সরাসরি রাহুল-খাড়গের কাছে তাঁদের রিপোর্ট জমা দেবেন।