বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে হুগলি লোকসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। হুগলিতে 'রাজনৈতিক হাওয়া বদল'-এর পরেই এবার বিজেপিতে 'ভাঙন'? মন্ত্রীর উপস্থিতিতে এবং রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করেন দু'বারের বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য, বিজেপির প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি সহ একাধিক বিজেপি নেতা কর্মীরা। সার্বিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে এই যোগদান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।এদিনের যোগদান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না, মিতালী বাগ। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এই নেতাদের উপস্থিতিতে এদিন তৃণমূলের দলীয় পতাকা হাতে তুলে নেন সিঙ্গুর ২ নম্বর পঞ্চায়েতের সদস্য সমীর হালদার, বিজেপির প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি গৌতম মোদক , বিজেপি কর্মী সৌরভ মোদক,হারাধন সিংহ, সন্তোষ মণ্ডল সহ একাধিক বিজেপি নেতা-কর্মীরা।
কেন হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত? এই প্রসঙ্গে সমীর হালদার বলেন, 'এলাকার উন্নয়নের জন্য দলের কোনও সাহায্য আমি পাইনি। আমাকে সবসময় তৃণমূলের কাছেই যেতে হয়। সাধারণ মানুষের পাশে যাতে আরও ভালোভাবে থাকতে পারি সেই জন্য এই সিদ্ধান্ত নিলাম।' এদিকে এই বিজেপি নেতাদের যোগদানের পরেই রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'কোনও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের বিজেপি করা উচিত নয়।'
যদিও সিঙ্গুর বিধানসভার বিজেপির আহ্বায়ক মধুসূদন দাস বলেন, 'যাঁরা যোগদান করছেন তাঁদের একজনকে ২০২১ সালে দল শো কজ করেছিল। তারপর থেকে তিনি দলের থেকে অনেক দূরে। অপরজন যিনি পঞ্চায়েত সদস্য তিনি নিরুপায় হয়ে তৃণমূলে গিয়েছেন। তাঁর কাছে অন্য কোনও উপায় ছিল না। এর কোনও প্রভাব বিজেপির উপর পড়বে না।’
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে হুগলি কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী করেছিল লকেট চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন রত্না দে নাগ। কিন্তু, সেইবার হুগলি কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন লকেট।
২০২৪ সালে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় অন্যতম বড় চমক ছিল রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে হুগলি লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্যের শাসক দল। অন্যদিকে, সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র থেকে লকেট চট্টোপাধ্যায়কেই আরও একবার প্রার্থী করে বিজেপি। রাজনৈতিক 'জুনিয়র' রচনা কার্যত ধরাশায়ী করেন লকেটকে এবং তৃণমূলের জন্য লোকসভা নির্বাচনে জয় ছিনিয়ে এনেছিলেন। এরই মধ্যে হুগলিতে তৃণমূলের ভাঙন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।